পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি : আসন্ন রমজানের দেড় মাস আগেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার হাট-বাজারে বোতলজাত সোয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট। জানা যায়, এস আলম গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ দেশে ভোজ্যজাত আমদানি করে অন্যান্য কোম্পানির কাছে বিক্রি করে। বড় এ তিনটি কোম্পানির কাছে কেনা সয়াবিন তীর, ফ্রেস, রূপচাঁদা, পুষ্টি একাধিক কোম্পানির নামে ডিলারের মাধ্যমে খুচরা বাজারে মুদিখানার দোকানে বিক্রি হয়।
সাধারণ গ্রাহকরা মুদিখানার দোকানে এসব কোম্পানির ২৫০-৫শ’ গ্রাম, ১ লিটার ও ২ লিটার বোতলজাত সোয়াবিন তেল পাচ্ছে না। বোতলজাত তেলের দামে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হয়। নিত্যদিনের অন্যতম ভোজ্য তেল সংকট থাকায় সাধারণ গ্রাহকরা হয়রানির শিকার হচ্ছে।
মুদিখানা দোকানের খুচরা ব্যবসায়ীরদের অভিযোগ, তীর, ফ্রেস, রূপচাঁদা, পুষ্টি এ চারটি বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ কোম্পানির সেলম্যান ও ডিলার যোগসাজসে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী বোতল জাত সয়াবিল তেল সরবারহ দিচ্ছে না। কোন কোম্পানি বোতলজাত সয়াবিন তেল দিলেও তার বিপরীতে প্যাকেটজাত আটা, লবণ, আতব চাল, মশার কয়েল, সাবান, ডাল এসব পণ্য নিতে বাধ্য করছে। অন্যথায় খুচরা ওই দোকানদারকে শুধুমাত্র সয়াবিন তেল দিচ্ছে না।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এক লিটার সোয়াবিন তেল বোতলজাত মোড়কে ১৭৫ টাকা এবং কেনেলা তীর ১৯০ টাকা কোম্পানির মূল্য নির্ধারণ করা। উক্ত তেল দোকানিদের কাছে পাইকারী দরে কেনা পড়ে ১৭৩ থেকে ১৭৪ টাকা। ফলে ব্যবসায়ীরা মোটা অংকের মূলধন খাটিয়ে লাভের পরিমাণ থাকে ১ থেকে ২ টাকা। তেঁতুলিয়া চৌরাস্তা বাজারে মুদিখানা ব্যবসায়ী মৃদুল বলেন, খোলা সয়াবিন তেলের দামও ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে দাম উঠা নামা করে।
একদিন আগেও যে তেলের পাইকারি দাম ১৬৭ টাকা লিটার পরের দিন সেই তেল কিনতে হয় ১৭২ টাকা। ফলে ১৬৭ টাকা কেনা তেল খুচরা ক্রেতাদের কাছে ১৭৫ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু পাইকারি ১৭২ টাকা লিটার কেনা তেল কত বিক্রি এ নিয়ে হিমসীম খাচ্ছি।
আরও পড়ুনতেঁতুলিয়া উপজেলার এসকেএস এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী ও ডিলার সাজিদ বলেন, বর্তমান বাজারে খুচরা সয়াবিন তেল সরকারিভাবে ৮টাকা দাম বাড়ানোর পরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশে তেল আমদানিকারক বড় কোম্পানিগুলোর কারসাজি রমজানে খোলা সয়াবিন ২শ’ টাকা লিটারে বিক্রির জন্য কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। যে কারণে ডিলারদের চাহিদা মত প্রতিমাসে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে সহজে ভোজ্য তেলের সমস্যা মিটবে না।
পঞ্চগড় জেলা রূপচাঁদা কোম্পানির সেল অফিসার (এসও) রাসেল বলেন, পঞ্চগড় জেলায় প্রতিমাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের চাহিদা রয়েছে ৭০-৮০ লাখ টাকার। কিন্তু কোম্পানি ডিলারের চাহিদা মত সরবরাহ করছে না। কেন পারছে না ছোট চাকরিজীবী হিসেবে তা জানা নেই।
খুচরা ব্যবসায়ীদের মতে, সরকার আসন্ন রমজান মাস আসার পূর্বেই অন্যতম ভোজ্য তেল সয়াবিনের দাম নির্ধারণসহ বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে তেল সংকট তীব্র হবে। তাই সরকারের এ বিষয়ে বাজার মনিটরিংসহ নজরদারী বাড়াতে হবে।
মন্তব্য করুন