সরকার নির্ধারিত দামকে বৃদ্ধাঙ্গুলি
এলপি সিলিন্ডারের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের সংসারিক বাজেটে চাপ
![](https://dailykaratoa.com/public/images/2025-02/LPG-GAS_original_1738771195.jpg)
হাফিজা বিনা : দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মধ্যবিত্তের জীবনযাপনে আরও একবার ধাক্কা লাগল। বেড়েছে এলপি গ্যাসের দাম। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও (বিইআরসি) ভোক্তা পর্যায়ে গত রোববার ১২ কেজির সিলিন্ডার গ্যাসের দাম ১৯ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে এক হাজার ৪৭৮ টাক, যা গত মাসে ছিল এক হাজার ৪৫৯ টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বাড়া এবং ডলারের দাম বাড়ার কারণে এবার দাম বাড়িয়ে তা সমন্বয় করা হয়েছে। এই নতুন দাম গত রোববার সন্ধ্যায় কার্যকর হয়। তবে বাস্তবে কোথাও এই দামে গ্যাস পাচ্ছেন না ভোক্তারা। খুচরা পর্যায়ে একেক দোকানে একেক দাম। এজন্য ভোক্তাদের গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
বিইআরসি সূত্রে জানা গেছে, এলপি গ্যাসের দাম বাড়ার মূল কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম বাড়া এবং ডলারের দাম বাড়া। সৌদি আরামকো’র প্রোপেন এবং বিউটেনের দাম বেড়েছে এবং এই বাড়তি দাম বাংলাদেশের বাজারে প্রভাব ফেলেছে।
এছাড়া, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল এবং অকটেনের দামও এক টাকা করে বেড়েছে। যারা রান্নার জন্য এলপি গ্যাস ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এই দাম বাড়ানোয় সরাসরি আর্থিক বোঝা বাড়াবে। এছাড়া, পরিবহন খরচও বেড়েছে। এদিকে দাম বাড়ার ফলে সরকার নির্ধারিত দামকে পাত্তা না দিয়ে বিপণন কোম্পানির বাড়তি দামের জন্য ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে আরও ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
সরকার নির্ধারিত দাম ঘোষণার পর পরই খুচরা বাজারে ১২ কেজি ওজনের বিভিন্ন কোম্পানির এলপি গ্যাস এক হাজার ৪৭০ থেকে থেকে বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৯০ থেকে এক হাজার ৫৫০ টাকায়। বিপণন কোম্পানিগুলো তাদের নিজেদের মতো করে বাড়তি দামে ডিলারদের পণ্য সরবরাহ করছে। ডিলারদের কাছ থেকে নিচ্ছেন সাব ডিলাররা। তাদের থেকে আবার খুচরা দোকানিরাও চড়া দামে পণ্য কিনে আবারও ভোক্তাদের কাছে তাদের লাভ রেখে চড়া দামে বিক্রি করছেন।
আরও পড়ুনএতে আবাসিক গ্রাহকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির মধ্যে এলপি গ্যাসের দাম বাড়ায় মানুষের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। খুচরা বাজারে বাড়তি দামে এলপি গ্যাস বিক্রিতে সরকারিভাবে কোনো তদারকি হচ্ছে না। ফলে বিক্রেতারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
এলপি গ্যাসের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ১২ কেজি ওজনের বিভিন্ন কোম্পানির এলপি গ্যাস সরবারাহের পর এক হাজার ৪৯০ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। কোম্পানিগুলো দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
শহরের সুত্রাপুর এলাকার গৃহবধূ জান্নাত আরা করতোয়া’কে বলেন, তার আট সদস্যের পরিবারে মাসে দু’টি এলপিজি সিলিন্ডার লাগে। এতে খরচ হবে তিন হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, গত মাসে তিনি ১২ কেজির সিলিন্ডার দু’টো গ্যাস কিনেছেন দুই হাজার ৮৮০ টাকায়। সেই গ্যাস এবার কিনতে হবে প্রতিটি এক হাজার ৫২০ টাকায়। সরকারের নির্ধারিত দাম কোন কোম্পানিই মানে না, অযথা দোকানে গিয়ে সমন্বয় করা সেই দামের কথা বললে অপমানিত হতে হয়।
মন্তব্য করুন