নওগাঁয় স্বল্প শ্রমে উৎপাদন বেশি গাজরে, লাভবান কৃষক

নওগাঁ প্রতিনিধি : মৌসুমে একই ধরনের ফসলের চাষাবাদ না করে ভিন্ন আবাদ করলে ভাল দাম পাওয়া যায়। এতে হাট-বাজারে সে ফসলের সরবরাহ কম থাকে। ফলে ভাল দাম পেয়ে লাভবান হোন কৃষকরা। পরিশ্রম ও খরচ কম, উৎপাদন বেশি এবং ভাল দাম পাওয়ায় নওগাঁয় গাজর চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের।
গাজর এক প্রকার মূল জাতীয় সবজি। এটি কাঁচা এবং রান্না দুই হিসেবেই খাওয়া যায়। গাজর চাষে জমি প্রস্তুত করতে ৫-৬ টি চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হয়। এরপর জৈব সার, পটাশ ও ইউরিয়া দিয়ে জমি প্রস্তুত করে নিয়ে বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। তিন মাসে (কার্তিক মাসে রোপণ এবং মাঘ মাসে উত্তোলন) গাজর উঠানো উপযোগী হয়। এর রোগ বালাই কম।
প্রতি বিঘায় প্রকারভেদে ৮০ মণ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত উৎপাদন হয়ে থাকে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। গাজর শুধু তরকারিতে সবজি হিসেবে নয়। সালাদ হিসেবেও খাওয়া হয়। এছাড়া ভর্তা, পিঠা, হালুয়া, পায়েস ও ক্ষীর তৈরি করে খাওয়া যায়। গাজর গ্যাসের জন্যও উপকারী। হজম শক্তিও ভাল বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
জেলার মান্দা উপজেলায় এ বছর বেশি পরিমাণ গাজরের আবাদ হয়েছে। প্রায় ৬শ’ বিঘা জমিতে গাজর চাষ হয়েছে। উপজেলার কুশুম্বা ও বিলকরিল্যাসহ আশপাশের গ্রামের মাঠ এখন সবুজের সমারোহ। ইরি-বোরো রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষক। পরিপক্ক হওয়ায় জমি থেকে গাজর উঠানো হচ্ছে। এরপর সেসব গাজর মেশিনে দিয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে। তারপর পাইকারি ব্যবসায়িদের কাছে দরদার করে বিক্রি করা হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে এক হাজার মণ হলেও বর্তমানে ৫শ’-৬৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুনকুশুম্বা গ্রামের গাজর চাষি নিজাম উদ্দিন বলেন, গতবছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। সেই আশা থেকে এ বছর বাড়তি ৯ বিঘাসহ মোট ১৫ বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন। তিনি বলেন, হালচাষ, বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বিঘাতে খরচ পড়ে ১৪-১৬ হাজার টাকা।
বিঘাতে ফলন হয় ৮০ মণ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত। মৌসুমের শুরুতে ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করা যায়। বর্তমানে সবাই উত্তোলন করায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। এতে দাম কমেছে। বর্তমানে ১৪-১৬ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। খরচ বাদে বিঘাতে লাভ থাকে ৩০-৪০ হাজার টাকা।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলায় এ বছর ২৭০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছে। হেক্টর প্রতি ফলন ১৫ মেট্রিক টন। শীত মৌসুমে আবাদ হয়ে থাকে। এটি সবজি ও সালাদ হিসেবে খাওয়া যায়। এ কারণে ভোক্তাদের কাছে চাহিদা রয়েছে। বাজারমূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরা চাষাবাদে বেশ আগ্রহী।
মন্তব্য করুন