ভিডিও শনিবার, ০১ মার্চ ২০২৫

গ্রীষ্মকালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ

গ্রীষ্মকালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, প্রতীকী ছবি

শীত বিদায় নিচ্ছে। আসন্ন গ্রীষ্মে সাড়ে চার কোটি গ্রাহক পুড়বে লোডশেডিংয়ের তাপে। শীতের মধ্যেই বিদ্যুতের অস্থিরতায় উদ্বিগ্ন শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে দেশের শহরাঞ্চলে গরম পড়া শুরু হলেও গ্রামাঞ্চলে শীত কিছুটা রয়ে গেছে। এর মধ্যে ফিরছে লোডশেডিং। আগামী মাস থেকে বিদ্যুতের সংকট আরও বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরাও।

শীতের ভরা মৌসুমেই এবার সাক্ষাৎ লোডশেডিংয়ের। শীত মৌসুমে বিদ্যুতের গড় চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াট কিন্তু উৎপাদন ৯ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি। বাকিটা লোডশেডিং করতে হয়। শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম হলেও তা সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবি। সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়লা সংকটে কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ থাকায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।

ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট, বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি, দেশে ডলার সংকট, ডলারের বিপরীতে টাকার মান হ্রাস সহ নানা কারণে সরকার গত বছর থেকেই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি বন্ধ করেছে।

বিগত সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে আসন্ন গরম মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে বড় ঘাটতি থাকবে বলে প্রায় নিশ্চিত করেছেন বিদ্যুৎ খাত সংশ্লিষ্টরা। কেননা পর্যাপ্ত বিদ্যুতের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণে জ্বালানি আমদানির জন্য যে পরিমাণ বৈদেশিক অর্থের জোগান দেওয়া যাবে বলেও পূর্বাভাস নেই। এমন বাস্তবতায় আসন্ন গরম মৌসুমে দৈনিক প্রায় ৪ হাজার মেগাওয়াট পরিমাণ লোডশেডিং হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে বাড়বে জনভোগান্তি।

পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে গ্রীষ্ম মৌসুমে ৭০০ মেগাওয়াট থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তবে রমজান মাসে লোডশেডিং মুক্ত রাখার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান, রমজান মাস যাতে লোডশেডিংমুক্ত রাখা যায় তারা সে চেষ্টা করবেন। তার অর্থ এই নয় যে লোডশেডিং হবে না। এটা নানা কারণে হতে পারে।

আরও পড়ুন

কখনো বিতরণ লাইন আবার সঞ্চালন ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে লোডশেডিং হতে পারে। জ্বালানি উপদেষ্টা জানান, এ বছর রমজানের জন্য ১৫ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট এবং গ্রীষ্মের জন্য ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বরাদ্দের পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট দৈনিক গ্যাসের সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। রমজান মাসে তা বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নিয়ে যাওয়া হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত জ্বালানি আমদানি করা হবে। এরপর এপ্রিল মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিগত হাসিনা সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে কোনো সিস্টেম (পদ্ধতি) বা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেনি। এতে দেনার পরিমাণ দিন দিন বেড়েছে। এখনো পিডিবিকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতে চার টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তীব্র সংকটের জন্য পতিত হাসিনা সরকারের সীমাহীন লুটপাট, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, সংকট উত্তরণে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। আগামী মার্চ থেকে দেশে গ্রীষ্মকাল ও সেচ মৌসুম শুরু হচ্ছে।

২ বা ৩ মার্চ শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। গরম মৌসুমে দৈনিক প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা দাঁড়াবে। জ্বালানি সংকটের কারণে বর্তমানে ১১ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে। ফলে শীতের মধ্যেই গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এক থেকে চার ঘন্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ের সংবাদ পাওয়া গেছে। এতে মনে হচ্ছে আগামী গরমে লোডশেডিং পরিস্থিতি তীব্রতর হবে। আগামী গ্রীষ্মে দেশে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, সেই বিষয়টি এখনই ভাবতে হবে। সম্ভাব্য সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক- এমনটি কাম্য।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অপারেশন ডেভিল হান্ট : আরও ৬১৮ জন গ্রেফতার

পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরে দুই মাসেও ভেঙে পড়া স্লাব সংস্কার হয়নি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে চোরাচালানকৃত ৩০টি ভারতীয় ফোন জব্দ

বগুড়ার কাহালুর পাঁচগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা

কুড়িগ্রামের দারিদ্র বিমোচনে চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি