বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বিদ্যুৎশক দিয়ে মাছ নিধন, বিলুপ্ত হচ্ছে জলজ প্রাণী

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে রাতের আঁধারে ও দিনের বেলাতেও চলছে বিদ্যুৎ শক দিয়ে মাছ শিকার। এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে মাছের সাথে অন্যান্য জলজ প্রাণীও ধ্বংস হচ্ছে। এভাবে মাছ শিকার অব্যাহত থাকলে শিগ্গরই মাছের সাথে অন্যান্য জলজ প্রাণীও বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
সারিয়াকান্দির যমুনা নদীতে গোপনে দিনের বেলায় বা রাতে অহরহ চলছে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে মাছ শিকার। এ পদ্ধতিতে কয়েকটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারির সাহায্যে পানিতে সাময়িক বৈদ্যুতিক শক দেওয়া হয়। ব্যাটারিগুলো নৌকায় রাখা হয়। এ পদ্ধতিতে পানিতে বৈদ্যুতিক শকের কারণে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সকল প্রকার জলজ প্রাণী বৈদ্যুতিক শকপ্রাপ্ত হয়।
ফলে রেণু মাছ থেকে শুরু করে বড় মাছ পর্যন্ত বৈদ্যুতিক শক প্রাপ্ত হয়ে পানিতে ভেসে ওঠে। অসাধু মাঝিরা তখন একটি চাকতির মতো জাল দিয়ে এসব মাছ পানি থেকে নিজেদের নৌকায় সংগ্রহ করেন। পরে সংগ্রহকৃত মাছগুলো সারিয়াকান্দির যমুনাপাড়ের আড়ৎ বা বগুড়ার বিভিন্ন আড়ৎ এ বিক্রি করা হয়। এদিকে এ ভয়ানক পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে মাছের সাথে অন্যান্য জলজ প্রাণীও মরে পানির উপরে ভেসে ওঠে।
এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে এ উপজেলায় দেশি মাছ আর বেশি একটা পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই বেশকিছু দেশি প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিছু জেলেরা বলছেন, এ পদ্ধতিতে মাছ শিকারের ফলে তারা বেড় জালে আর আগের মতো মাছ পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুনসম্প্রতি কাজলা ইউনিয়নের চর ঘাগুয়ার ঘাটে দুপর ১টার দিকে নৌকা ভিড়ানোর সাথে সাথেই গণমাধ্যম কর্মীদের দেখামাত্রই নৌকা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় অসাধু জেলেরা। তবে কিছু কিছু নৌকা ঘাটেই বাঁধা ছিল। সেইসব নৌকাগুলোতে খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় বিদ্যুশক দিয়ে মাছ শিকারের বেশকিছু সরঞ্জামাদি। তার মধ্যে রয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক ব্যাটারি, বৈদ্যুতিক তার, এলইডি বাল্ব প্রভূতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এসব নৌকার মাঝিরা সারারাত মাছ শিকারের পর কেউ মাছ বিক্রি করতে গেছেন, আবার কেউবা ঘুমাচ্ছেন। সারিয়াকান্দি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুর্শিদা খাতুন বলেন, মাছ শিকারে এটি একটি ভয়াবহ পদ্ধতি।
এ পদ্ধতিতে মাছ শিকার বন্ধে অবশ্যই আমাদের জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং ক্ষতিকর দিক নিয়ে জেলেদের সাথে আলোচনা করতে হবে। এর পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে অসাধু জেলেদের আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন