ভিডিও রবিবার, ০৯ মার্চ ২০২৫

জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলা আইসিসিতে প্রেরণ ও আইসিটির নাম পরিবর্তনের আহ্বান জানালেন টবি ক্যাডম্যান

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান কৌঁসুলির বিশেষ উপদেষ্টা টবি ক্যাডম্যান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মামলা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
বসনিয়া, কসোভো, রুয়ান্ডা, ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইউক্রেনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অপরাধ মামলায় কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই আইন বিশেষজ্ঞ আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এসময় তিনি এই সুপারিশ তুলে ধরেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা :
বৈঠকে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্ভাব্য সহযোগিতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালতের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এছাড়া, বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর ছত্রছায়ায় থাকা অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিপূরক বিচারব্যবস্থার আওতায় আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বর্তমান অবস্থা ও পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা:
বৈঠকের শুরুতেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) কার্যক্রমের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।
ট্রাইব্যুনালটি পূর্ববর্তী সরকার, বিশেষত ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত নৃশংসতার বিচার করছে।
বৈঠকে বিভিন্ন আইনি কাঠামো, নতুন সংযোজন ও অতীতের স্বৈরাচারী শাসন থেকে বেরিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
জি৩৭ চেম্বার্সের প্রধান টবি ক্যাডম্যান আইসিটির আইনি ও বিধিবদ্ধ কাঠামো সংশোধনের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করা দরকার যাতে এটি আগের স্বৈরাচারী শাসনের ধারাবাহিকতা মনে না করা হয়।
এছাড়া, মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত বিষয় ও প্রমাণ গ্রহণের নীতিমালা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত করার বিষয়েও আলোচনা হয়, যাতে ন্যায়বিচার ও সুবিচারের সর্বোচ্চ মান বজায় থাকে।
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য:
অধ্যাপক ইউনূস আইসিটি প্রসিকিউশন টিমের কাজের প্রশংসা করে বলেন, তাদের আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের শামিল।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্বের জানা উচিত ১,৪০০ শিক্ষার্থী, বিক্ষোভকারী ও শ্রমিকদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল কে এবং মূল অপরাধীরা কারা। জাতিসংঘের তদন্ত দল শেখ হাসিনা সরকারের আসল চেহারা উন্মোচন করেছে। এখন আমাদের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’
বৈঠকে সাক্ষীদের নিরাপত্তা ও চুরি হওয়া সম্পদ উদ্ধারের পদক্ষেপ, আইসিটি ও প্রসিকিউশন টিমের সম্পূর্ণ সহায়তা নিশ্চিত করা, সাক্ষীদের নিরাপত্তা প্রদান, অভিযুক্তদের জন্য সুবিচার নিশ্চিতে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া, আগের সরকারের আমলে লুটপাট হওয়া সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দেশে ফিরিয়ে আনার আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া নিয়েও পর্যালোচনা করা হয়।
বৈঠকের শেষে অধ্যাপক ইউনূস টবি ক্যাডম্যানকে উপহার ও নতুন বাংলাদেশের প্রতীকী বার্তা ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ: গ্রাফিতি অব বাংলাদেশস নিউ ডন’ বইটি উপহার দেন, যা বাংলাদেশের নতুন যুগের আশা ও দৃঢ় সংকল্পের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশে ভ্রমণে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র

রাজুতে ধর্ষণবিরোধী মঞ্চের ঘোষণা : জাবি ও রাবিতেও বিক্ষোভ

২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ঢাবি ছাত্রীদের

ধর্ষকের ফাঁসি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল ঢাবি

যৌথবাহিনীর অভিযানে সাবেক এমপির বাসা দখলমুক্ত

মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণ, মামলার এজাহারে ভয়াবহ-রোমহর্ষক ঘটনা