পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গম চাষে সাফল্যের স্বপ্ন বুনছেন কৃষক

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় চলতি মৌসুমে গম চাষে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। রবি শস্যের মধ্যে অন্যতম একটি লাভজনক খাদ্য শস্য হচ্ছে গম। ধান চাষের পাশাপাশি উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে এই লাভজনক আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।
দিগন্তজোড়া মাঠে সবুজের সমারোহ শেষে ফাল্গুনী বাতাসে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ঢেউ খেলছে গমের সবুজ শীষ। গম কেটে নিয়ে পাট চাষের সুযোগ থাকায় এবং বর্তমানে পাটের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে গম চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ভাঙ্গুড়া উপজেলায় আশানুরূপ জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে। এবার উপজেলার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বারি গম- ২৮, ৩০, ৩২, ৩৩ ও ডাবলু এম.আর.আই ১, ২ জাতের অধিক ফলনশীল গমের চাষ করা হয়েছে। রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গম চাষে চাষিদের আগ্রহী করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত প্রায় ২ হাজার কৃষান-কৃষানীর মাঝে উন্নত জাতের গমবীজ, সার, বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে উপজেলা কৃষি অফিস।
আরও পড়ুনউপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা গ্রামের প্রশিক্ষিত কৃষক ময়নুল হক বলেন, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এবার ভালো দাম ও ফলনের আশায় দুই বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। গম চাষে খরচ কম হয়। গম শস্যের কোনো কিছুই ফেলতে হয় না। গম বিক্রির পর গমের আঁটি বিক্রি করেও টাকা আসে। প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয় না হলে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোছা. শারমিন জাহান বলেন, চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে। এ বছর গমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন। হেক্টর প্রতি ৩.৯ থেকে ৪ মেট্রিক টন পর্যন্ত গড় ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এ পর্যন্ত গম চাষে তেমন উল্লেখ যোগ্য কোন রোগ-বালাইয়ের আক্রমন হয়নি। তিনি আরও বলেন, উপজেলায় গমবীজ উৎপাদনের জন্য ৬ টি প্রদর্শনী প্লটে ৭ একর জমি রয়েছে। গম চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি গম চাষের পর কৃষকরা ওই জমিতে ভালো ভাবে আমন ধান, পাট চাষসহ অন্য আবাদ করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন