‘হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পারিবারিক শাসন’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পারিবারিক শাসন ।
ড. ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার সময় বাংলাদেশের অবস্থা বর্ণনা করে গার্ডিয়ানকে বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ অনেকটা গাজার মতো। ভবনগুলো ধ্বংস করা না হলেও পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল একটি দস্যু পারিবারিক শাসন। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন পালিত হতো। হাসিনার আমলে দুর্নীতির মাত্রা এত বেশি ছিল যে এতে ব্যাংকিং খাত এবং অর্থনীতি ধসে পড়েছে।
আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া হাসিনার আত্মীয়দের মধ্যে তার বোনের মেয়ে যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিকও ছিলেন। হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে জড়িত সম্পদের বিষয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার পর এবং বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর টিউলিপ সিদ্দিককে বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করতে হয়। যদিও তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গার্ডিয়ানকে দেওয়া সাক্ষাতকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘ডিলমেকার’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বর্তমান মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি অনেক কঠোর হওয়া সত্ত্বেও ড. ইউনূস বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে দেখার জন্য ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছেন।
আরও পড়ুনড. ইউনূস ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আসুন, আমাদের সঙ্গে ডিল (চুক্তি) করুন। তিনি স্বীকার করেন যে ট্রাম্পের প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে তিনি দৃঢ়ভাবে জানান, সম্পর্ক উন্নয়নের গণতান্ত্রিক এই প্রক্রিয়া থেমে থাকবে না। ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইউএসএআইডি তহবিল কাটছাঁট করেছে এবং বাংলাদেশের ওপর বিনা প্রমাণে অভিযোগ এনেছে যে, তারা সাহায্যের অর্থ ‘চরম বামপন্থি কমিউনিস্ট’ নির্বাচনে ব্যবহার করেছে। এর ফলে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে এবং ড. ইউনূসের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ড. ইউনূস ট্রাম্পের সঙ্গে ইলন মাস্কের জোটকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন। তিনি এই বিলিয়নিয়ারকে বাংলাদেশে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এপ্রিল মাসে মাস্কের বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের অবকাঠামো আধুনিকীকরণের পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন