নাসার শীর্ষ বিজ্ঞানীসহ ২৩ জন চাকরিচ্যুত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (নাসা) শীর্ষ বিজ্ঞানী ক্যাথরিন কেলভিনসহ মোট ২৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। নাসার মুখপাত্র চেরিল ওয়ার্নারের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
সামনের দিনগুলোতে আরও কর্মকর্তা-কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এএফপিকে চেরিল ওয়ার্নার বলেন, “গত ১০ মার্চ একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করে আমরা জানতে পেরেছি, আপাতত ক্যাথরিন কেলভিনসহ ২৩ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং সামনের দিনগুলোতে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে।”
“বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তালিকায় থাকা কর্মকর্তা-কর্মীরা যদি আবেদন করেন, সেক্ষেত্রে তাদেরকে স্বেচ্ছা অবসরের সুযোগ দেওয়া হবে এবং আনুষাঙ্গিক কিছু সুযোগ-সুবিধাও প্রদান করা হবে; আর যদি আবেদন না করেন, তাহলে একেবারে পত্রপাঠ বিদায়।”
জলবায়ুবিশেষজ্ঞ ক্যাথরিন নাসার জলবায়ু গবেষণা বিভাগের প্রধান নির্বাহী ছিলেন। জাতিসংঘ প্রতি বছর জলবায়ু সংক্রান্ত যে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, সেই প্রতিবেদন প্রস্তুতের সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি।
তাকে যে পদচ্যুত করা হচ্ছে, সে ইঙ্গিত অবশ্য ফেব্রুয়ারিতে তাকে দেওয়া হয়েছিল। গত মাসে জলবায়ুবিজ্ঞান নিয়ে একটি বড় সেমনার হয়েছে বেইজিংয়ে। সেখানে ক্যাথরিনকে কেলভিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং তিনি যাওয়ার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন; কিন্তু পরে তাকে সেই সম্মেলনে যেতে নিষেধ করা হয়।
আরও পড়ুনবস্তুত, বহু দশক ধরে জলবায়ু সংক্রান্ত গবেষণায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে নাসা। কৃত্রিম উপগ্রহ এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক যন্ত্র ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু ও পরিবেশ সংক্রান্ত বিশদ ও বিস্তারিত বহু তথ্য সংগ্রহ করে নাসা এবং সেসব বিশ্লেষণের জন্য গবেষণাও করে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রথম সারির বিভিন্ন জলবায়ু সংস্থা তাদের প্রতিবেদন প্রস্তুতের ক্ষেত্রে নাসার তথ্য ও বিশ্লেষন ব্যবহার করে।
ট্রাম্প অবশ্য জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারটি আমলেই আনতে চান না, বরং একে তিনি ‘অপবিজ্ঞান’ বা ‘ভুয়া’ বলে মনে করেন। সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত সনদ প্যারিস এগ্রিমেন্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি। প্রথম যখন প্রেসিডেন্ট হয়েছিলন ট্রাম্প, তখনও একই কাজ করেছিলেন।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নাসাকে গবেষণাধর্মী সংস্থার পরিবর্তে একটি আবিষ্কারধর্মী সংস্থা হিসেবে দেখতে চান ট্রাম্প। এ কারণে এই দপ্তরের গবেষণাধর্মী বিভাগগুলো থেকে কর্মী কাটছাঁট করছেন তিনি।
সূত্র : এএফপি
মন্তব্য করুন