ভিডিও রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

প্রমিথিউস ব্যান্ডের ‘বিপ্লব’ এখন ট্যাক্সি চালক

প্রমিথিউস ব্যান্ডের ‘বিপ্লব’ এখন ট্যাক্সি চালক, ছবি: সংগৃহীত।

বিনোদন ডেস্ক : ৯০’র দশকের অন্যতম জনপ্রিয় ‘প্রমিথিউস’ ব্যান্ডদলের প্রধান ও ভোকাল বিপ্লব। ব্যান্ড, মিক্সড ও একক অ্যালবাম, স্টেজ শো-সব জায়গায় নব্বই দশকে দাপুটে বিচরণ ছিল বিপ্লবের। এলআরবি, নগরবাউলের পাশাপাশি হেঁটেছে প্রমিথিউস। ব্যান্ডে যেমন সরব ছিলেন, তেমনি আইয়ুব বাচ্চু, জেমস, হাসান ও বিপ্লব সমানতালে উচ্চারিত একটি নাম ছিল। নব্বই দশকে এই চার ব্যান্ড ও চার শিল্পীর সমান বিচরণে মুখর ছিল বাংলাদেশের গানের জগৎ। বছরের পর বছর ব্যান্ড প্রমিথিউসকে স্টেজ শো এবং টেলিভিশনের কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি। কোথাও নেই বিপ্লব। ফেসবুকে মাঝেমধ্যে উঁকি দেন। এক সময়ের দেশ মাতানো গায়ক বিপ্লব এখন পরিবার নিয়ে থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্সে। স্ত্রী, দুই ছেলে আদিব,অ্যারন ও মেয়ে তটিনীকে নিয়ে বিপ্লবের এখনকার সংসার।

তবে এখন সংসার চালাতে এই গায়ক নিউইয়র্কে ট্যাক্সি সার্ভিসের কাজ করছেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে বিপ্লব জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে গিয়ে তিনি প্রথম কাজ শুরু করেন আমেরিকান এয়ারলাইনসে। এক বছর পর গাড়ি কিনে ট্যাক্সি সার্ভিস শুরু করেন। দেশের রক গানের জনপ্রিয় এই শিল্পী যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাক্সি চালান-ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুনলেই হয়তো চমকে যেতে পারেন। তবে বিপ্লব এতে মোটেও বিচলিত কিংবা বিব্রত নন। তিনি যা, তা-ই সবার সামনে থাকতে চান। বিপ্লবের কথায়, ‘আমি ট্যাক্সি চালাই, বলতে সংকোচ বোধ করি না। আমি তো চুরি করছি না। মানুষকে সেবা দিচ্ছি, বিনিময়ে টাকা নিচ্ছি। আমেরিকা আসার পর আমার অনেক বড় অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিদেশ বলতে আমরা দেশে বসে যা বুঝি, বিদেশ আসলে মোটেও তা না। আমেরিকার লাইফ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, যা আমার পরবর্তী জীবনে কাজে দেবে।

তবে বিপ্লব গান-বাজনা থেকে দূরে সরে যাননি। বললেন, ‘আমার অস্তিত্বে গান।’ নতুন গান লিখছেন। নতুন গানের সুরও তৈরি করছেন। এর মধ্যে অনেকগুলো নতুন গিটার কিনেছেন। ছোট ছেলে অ্যারনের জন্যও গিটার কিনে রেখেছেন। কাজের ফাঁকে বিপ্লব প্রায় দিনই গিটার নিয়ে প্র্যাকটিসে বসে পড়েন। জানিয়ে রাখলেন, সৃষ্টিকর্তা যদি শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ব্যান্ডের সবাইকে নিয়ে আবার গানের ময়দানে নামবেন। এর মধ্যে নিজে এককভাবে বেশ কয়েকটি গানও করেছেন। দেশে বিপ্লব তো ভালোই ছিলেন। কেন আপনাকে দেশের বাইরে যেতে হলো?  ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে কথা না বলে বিপ্লব সরাসরি বললেন, ‘সৃষ্টিকর্তা জীবনের এই সময়টা এখানেই লিখে রেখেছিলেন, তাই আসতে হয়েছে।’

আরও পড়ুন

যে বিপ্লব স্টেজ শো নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন, তাকে এখন ট্যাক্সিতে করে লোকজনকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দিয়ে আসতে হয়। এ নিয়ে অবচেতন মনেও কিছু উঁকি দেয় কিনা- প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব বললেন, ‘আমি যে লাইফস্টাইল লিড করতাম, সেখান থেকে বেরিয়ে এসে এখন যে লাইফ লিড করছি, মানুষ হিসেবে এটাই বড় যোগ্যতা। যদি ভাবতাম, আরে ভাই আমি তো বাংলাদেশের বিপ্লব, এখানে এসে কী করছি! তখন কিন্তু আমি শেষ! মানে আমি ব্যর্থ-হতাশ হয়ে যাব। এই হতাশা আমাকে গ্রাস করবে। আমি মনে করি, দিস ইজ পার্ট অব লাইফ, আমি সময়টাকে উপভোগ করছি। আমি নতুন গান লিখছি, গানের মিউজিক করছি, কোনো কিছু কিন্তু থেমে নেই। নিজের একটা ইউটিউব প্ল্যাটফর্মও চালু করব, ভক্ত-শ্রোতারা প্রতিনিয়ত গান পাবেন।’

বিপ্লব নিউইয়র্কে থেকেও মাঝেমধ্যে কনসার্টে গান করেন। তবে বেশিরভাগ স্টেজ শো নিউইয়র্কের বাইরে করা হয় বলে জানান তিনি। বললেন, ‘ব্যাটে-বলে মিললে তখনই প্রোগ্রাম করি।’ যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাক্সি সার্ভিসকে কেন বেছে নিলেন? অন্য কোনো কিছু করার সুযোগ কি ছিল না? বিপ্লব বলেন, ‘আমি স্বাধীনমতো কাজ করছি। খবরদারি করার কেউ নেই। এখানে অন্য কাজ করব, আমার সেই সুযোগটাও তো নেই। স্মার্ট কিছু করতে হলে এখানকার পড়াশোনা লাগে। অভিজ্ঞতা লাগে। দেশের মাস্টার্স ডিগ্রি দিয়ে এ দেশে স্মার্ট কিছু করা যাবে না। এদিকে আরও পড়াশোনা করার সময় নেই, এখন পড়াশোনা করবে আমার ছেলেমেয়েরা। ওদের তৈরি করছি। আমি হয়তো বিষয়টা না বললেও পারতাম, কিন্তু এসব লুকোচুরি আমার মধ্যে নেই। তাই ট্যাক্সি চালানোর বিষয়টিও লুকাইনি।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বগুড়ার আদমদীঘিতে একাধিক মাদক মামলার আসামিসহ দুইজন গ্রেফতার, ইয়াবা উদ্ধার

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ট্রেনে কাটা পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

সিরাজগঞ্জে সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দিল সন্ত্রাসীরা

রমজানে লাইজলের বিশেষ উদ্যোগ: তৃতীয়বারের মতো শুরু হলো ‘পরিচ্ছন্নতাই পবিত্রতা’

গাইবান্ধার সাঘাটায় রেকড পরিমাণ ভুট্টা চাষ আর্থিক লাভবানের স্বপ্ন কৃষকের

৬০০০ এমএএইচ ব্লুভোল্ট ব্যাটারির স্মার্টফোনের ভিভো ভি৫০ ফাইভজি