গাইবান্ধার সাঘাটায় রেকড পরিমাণ ভুট্টা চাষ আর্থিক লাভবানের স্বপ্ন কৃষকের

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। যা অতীতের যে কোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি। কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও লাভজনক এ ফসলটি উপজেলার কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিভিন্ন ডেইরি খামারে গো-খাদ্য হিসেবে পুষ্টিকর সাইলেজ ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
চলতি মৌসুমে উপজেলার চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। সময় ও অর্থ অল্প ব্যয়ে অধিক ফলন পাওয়ায়। ভুট্টার পাতা গোখাদ্য হিসেবে ও গাছগুলো জ¦ালানি হিসেবে বিক্রি করা যায়। সব মিলে ভুট্টা চাষ অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভজন হওয়ায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের প্রতিযোগিতা চলছে। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসিও ফুটেছে। এখানকার উৎপাদিত ভুট্টা চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হাটবাড়ী, কানাইপাড়া, দীঘলকান্দি, পাতিলবাড়ি, গুয়াবাড়ি, গোবিন্দপুর, নলছিয়া, গাড়ামারা, চিনিরপটল, থৈকরেরপাড়াসহ ১০ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা ভুট্টা চাষ করছেন।
ভুট্টা চাষিদের সফলতা দেখে অন্যরাও ভুট্টা চাষের প্রতি ঝুঁকছেন। দীঘলকান্দি চর এলাকার ভুট্টা চাষি আলতাব হোসেন বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে কৃষকরা উন্নত জাতের ভুট্টা চাষ করে ভাগ্য বদলাতে পারবেন।
থৈকরেরপাড়া গ্রামের ভুট্টা চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, মাত্র ৯০-১২০ দিনের মধ্যে ভুট্টা ঘরে তোলা যায়। প্রতিবছর শীত মৌমুমে ভুট্টার বীজ বপন করতে হয়। এরপর পুরো মৌসুমে জমিতে ১-২ বার সেচ দিতে হয় এবং প্রতি বিঘায় ২-৩ বস্তা ইউরিয়া সার দিতে হয়। একেকটি ভুট্টা গাছে ২-৩টি ফল ধরে। ভুট্টা ক্ষেতে রোগবালাই নেই, সেচ, সার খরচও কম। কম খরচে ফলন বেশি পাওয়া যায়। তাই অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ বেশি লাভজনক।
আরও পড়ুনকৃষি অফিসের সহযোগিতা ছাড়াই এখানের কৃষকরা ভুট্টা চাষ করেছন। ইতোমধ্যেই গাছে গাছে ভুট্টার কলা পরিপক্ক হতে শুরু করেছে। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই মাড়াই কার্যক্রম শুরু করবে কৃষক। ভুট্টা বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যেতে হবে না পাইকাররা এসে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবারও ভুট্রা চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন সাঘাটার কৃষকরা। কৃষকরা জানান সরকারি সহায়তা পেলে আরও লাভবান হতে পারবো।
সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদেকুজ্জামান বলেন, ভৌগলিক কারণে সাঘাটা উপজেলার জমি ভুট্টা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। চলতি মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। প্রণোদোনা আওতায় সহায়তা দিয়ে ভুট্টার চাষ সর্ম্পকে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কারিগরী সহায়তা দিতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ভুট্টা চাষ করে কৃষক আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় সাঘাটার কৃষকরা ভুট্টা চাষের প্রতি ঝুঁকছেন।
মন্তব্য করুন