অনেক বুথে টাকা নেই, সামনে ‘আউট অব সার্ভিস’ নোটিশ

দীর্ঘ ৯ দিনের ঈদের ছুটিতে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আগামী রবিবার থেকে আবারো খুলবে এসব প্রতিষ্ঠান। ব্যাংক বন্ধ থাকলেও সচল রয়েছে এটিএম বুথ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিকল্প ডিজিটাল সেবাগুলো। এসব সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগাম নির্দেশনা দিলেও বাস্তবে বিভিন্ন স্থানে গ্রাহকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। টাকা মিলছে না অনেক এটিএম বুথে। ঢাকার বাইরে এ সমস্যা বেশি।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বেসরকারি চারটি ব্যাংকের পাঁচটি এটিএম বুথ রয়েছে। কিন্তু বুথগুলোতে গত ৩০ মার্চ থেকে টাকা নেই। শার্টারে দেওয়া নোটিশে লেখা রয়েছে, ‘আউট অব সার্ভিস’। বুথে টাকা না থাকার সত্যতা নিশ্চিত করে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের কালাইয়া বন্দর শাখার ব্যবস্থাপক মো. আল মামুন একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যাংক না খোলা পর্যন্ত (আগামী রবিবার) বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করার কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে দুঃখ প্রকাশ করে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু বাউফল নয়, একই অবস্থা রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী।
বর্তমানে দেশে ১২ হাজার ৯৪৬টি এটিএম বুথ এবং সাত হাজার ১২টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে। তবে এরই মধ্যে অনেক এটিএম বুথে নগদ অর্থের সংকট দেখা গেছে এবং কিছু ব্যাংক নিজেদের গ্রাহক ছাড়া অন্যদের লেনদেন সীমিত করেছে। এতে সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।
ইসলামী ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গ্রামাঞ্চলের বুথগুলোতে টাকা শেষ হয়ে গেলে নতুন করে টাকা পাঠানো একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তা ছাড়া ঈদ হওয়ার কারণে এক দিনেই টাকা শেষ হয়ে যায়।
এক হাজার টাকার নোট দিলে একবারে ৭০ লাখ দেওয়া যায়। আর ৫০০ টাকার নোট দিলে সর্বোচ্চ ৩৫ লাখ টাকা দেওয়া যায়। এখন ঈদ হওয়ার কারণে টাকা উত্তোলনের চাপ এত বেশি যে এক দিনেই টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া ১০ শতাংশ বুথে সমস্যা থাকবে—এটাই স্বাভাবিক। ব্যাংক পুরোপুরিভাবে চালু হলে এসব সমস্যা থাকবে না বলে মত ওই ব্যাংকারের।
ঈদকে কেন্দ্র করে এবার ছুটি শেষে অফিস খুলবে আগামী ৬ এপ্রিল থেকে। গত ২৮ মার্চ থেকে টানা ৯ দিন বন্ধ রয়েছে। এর আগে ২৬ মার্চ বিজয় দিবসের ছুটির পরদিন এক দিন ছুটি নিয়ে অনেকে টানা ১১ দিনের ছুটি কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে বর্তমানে টাকা তোলার জন্য বুথ রয়েছে ২০ হাজারের মতো। এর মধ্যে শুধু টাকা তোলার এটিএম বুথ ১২ হাজার ৯৩৮টি। যার মধ্যে শহরেই ৯ হাজার ৯১টি। আর সিআরএম আছে সাত হাজার ১২টি। এ রকম একই বুথে টাকা জমা ও উত্তোলন করা যায়। যে কারণে এই ধরনের বুথে টাকার সংকট কম হয়। এই সিআরএম ৯টি শহরে আছে পাঁচ হাজার। আর গ্রামে আছে দুই হাজার ৩টি। গ্রামীণ বুথ বলতে ঢাকাসহ সব বিভাগীয়, জেলা ও পৌর এলাকার বাইরে স্থাপিত বুথকে বোঝানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ঈদের আগের মাস মার্চে দুই উপায়ে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৬ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু এটিএম বুথ থেকে ৩২ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা এবং সিআরএম থেকে ১৪ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
মন্তব্য করুন