ধানের জমিতে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত সেচ : উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির আশঙ্কা
দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় ঝরে পড়ছে মৌসুমী ফল

স্টাফ রিপোর্টার : ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই সূর্য তেজোদীপ্ত। সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ফুটন্ত রোদের তাপে পুড়ছে মানুষ ও প্রাণিকূল ও গাছপালা। দীর্ঘদিন বৃষ্টির দেখা নেই। মাঠ-ঘাট সব শুকিয়ে গেছে। এপ্রিল মাসের প্রায় মাঝামাঝি সময় হয়ে এলেও এখন পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় মৌসুমী ফল আম, কাঠাল ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। ধানের ক্ষেতেও বেশি সেচ দিতে হচ্ছে। এতে বাড়বে উৎপাদন খরচ।
আজ বুধবার (৯ এপ্রিল) বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও সারাদেশে আগামী ২৪ ঘণ্টায় রাতে তাপমাত্রা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মাসেও বৃষ্টি না হলে আমের উৎপাদনের ক্ষেত্রে তেমন কোন ব্যঘাত ঘটবে না। তবে এমন আবহাওয়ায় আম. কাঠাল, লিচু গাছে পানি স্প্রে এবং গোড়ায় সকাল বিকেল পানি দিতে হবে। এমন আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে বলেছেন কৃষকদের। কারণ এই সময় ধান গাছে অতিরিক্ত তাপের জন্য গাছের গোড়ার পানি শুকিয়ে গেলে ধানের রেনু শুকিয়ে যাবে।
এই জন্য ধান গাছের গোড়ায় সব সময় পানি ধরে রাখতে হবে। এতে করে আদ্রতা বজায় থাকবে। এছাড়াও এই তাপপ্রবাহে পোকা-মাকরের আক্রমন হয় বেশি। সেই আক্রমণ ঠেকাতে কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার আম চাষী সাথী জানান, বৃষ্টিহীন আবহাওয়ায় প্রচন্ড খরার কারণে আম গাছ থেকে বেশ বড় বড় আম ঝরে পড়ছে। পানি ছিটিয়েও তা রোধ করা যাচ্ছে না। অল্প সময়ের মধ্যে বৃষ্টি না হয় তাহলে আমের ফলন বিপর্যয়ের আশংঙ্কা করছেন তিনি।
আরও পড়ুনবগুড়া সদরের কৈচর এলাকার কৃষক মাফু জানান, অতিরিক্ত রোদের তাপে ধানের জমির পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। নতুন শীষ শুকিয়ে গেলে ক্ষতি হয়ে যাবে এজন্য পানি দিতে হচ্ছে বেশি । অন্যদিকে শ্যালো মেশিনেও পানি উঠছে কম। ফলে তেল খরচ বেড়েছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দেখা দিয়েছে পোকামাকড়ের উপদ্রবও। এসব দমনে জমিতে ঘন ঘন কীটনাশকের ব্যবহার করতে হচ্ছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি অফিসার আব্দুর রহিম জানান, অতিরিক্ত রোদের কারণে কিছু আম ঝরে পড়লেও তেমন সমস্যা নাই। কারন ঝরে পড়ার পর যেসব আম থাকবে সেগুলোর মান ভালো থাকবে। গত বছর থেকে এবার আবহাওয়া অনেকটা ভালো। কারণ এবার প্রতিটি আম গাছে খরার আগেই আমগুলো মটর দানায় পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এমন আবহাওয়ায় আমের গাছের গোড়ায় সকাল বিকেল পানি এবং গাছের ওপরে পানি স্প্রে করতে হবে। একই ব্যবস্থা ধান গাছের ক্ষেত্রেও। গোড়ায় সব সময় পানি রাখতে হবে এবং পোকার আক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
মন্তব্য করুন