ভারি বর্ষণ ও ঝড়ের তান্ডব
পরীক্ষাকেন্দ্রে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, মোমবাতি জ্বালিয়ে এসএসসি পরীক্ষা

করতোয়া ডেস্ক : রংপুরের গঙ্গাচড়া ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ভারি বৃষ্টিপাত ও প্রচন্ড ঝড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে মোমবাতি জ্বালিয়ে এসএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা চলে প্রায় ৪৫ মিনিট।
গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, সারাদেশে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০ টায়, শেষ হয় বেলা ১ টায়। এদিকে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। প্রায় ৪৫ মিনিট বিদ্যুৎ না থাকা ও বৈরী আবহাওয়া থাকায় অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দেয় অনেক শিক্ষার্থী, আবার বেশি অন্ধকারের কারণে অনেককেই পরীক্ষাকেন্দ্রে খাতা নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। কিছু কেন্দ্রে বিকল্প হিসেবে মোমবাতি জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ৩৫৯ জন।
সরেজমিন উপজেলার হাজী দেলওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, গঙ্গাচড়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় অন্ধকারের মধ্যে পরীক্ষা দেয় পরীক্ষার্থীরা। অনেকেই আবার অন্ধকারের কারণে পরীক্ষার খাতা হাতে নিয়ে বসে ছিল। প্রায় ৪৫ মিনিট পর আসে বিদ্যুৎ।
হাজী দেলওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্র সচিব সাইয়েদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বিকল্প ব্যবস্থা করি।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওয়াতাধীন গঙ্গাচড়া জোনাল অফিসের ডিজিএম আইয়ুব আলী বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৩৩ কেভি লাইন ফল্ট করে। আমরা তা তাৎক্ষণিক ঠিক করেছি। সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দু:খিত।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, কেন্দ্রগুলোতে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়। কিছু কেন্দ্রে আগে থেকে বিকল্প ব্যবস্থা ছিল। আশাকরি পরবর্তীতে আর কোন সমস্যা হবে না।
বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি জানান, দিনাজপুরের বীরগঞ্জে প্রবল বৃষ্টিপাত ও লোডশেডিংয়ের কারণে মোমবাতি জ্বালিয়ে এসএসসি ও সমমানের প্রথম পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎবিহীন অবস্থাতেই সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে চলে বেলা ১টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুনআজ বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
জানা যায়, উপজেলায় সকাল থেকে বৃষ্টি ও ঝড়ের সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিং শুরু হয়। পরে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে অন্ধকার কক্ষে শিক্ষার্থীরা মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষায় বসে। ভারি বৃষ্টিতে কিছু কক্ষে পানি প্রবেশ করায় ও অন্ধকারে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দুর্ভোগে পড়ে পরীক্ষার্থীরা।
ফেন্সি হাসান নামে এক পরীক্ষার্থী জানায়, প্রশ্ন দেওয়ার আগেই বৃষ্টির সাথে সব অন্ধকার হয়ে যায়। পরীক্ষা শুরুর সাথেই কর্তৃপক্ষ মোমবাতি দিয়েছে। মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রথম পরীক্ষা সম্পন্ন করেছি যা সম্পূর্ণ একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
এদিকে পরীক্ষার পর শিক্ষার্থীরা জানায়, মোমবাতির আলোতে তাদের পরীক্ষা দেওয়া একেবারেই নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, তারা শান্তভাবে তাদের পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছে এবং ভালো ফলাফলের আশাবাদী।
এ ব্যাপারে ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহেদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি ও ঝড়ের কারণে লোডশেডিং শুরু হয়। তবে আমরা চার্জার লাইট ও মোমবাতির ব্যবস্থা করি। পরীক্ষায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী ফেরদৌস আলম বলেন, সকাল থেকে ভারি বর্ষণ ও ঝড়ের তাণ্ডবে লাইনে গাছ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে মাঠ পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন কাজ করছে।
মন্তব্য করুন