নিউজ ডেস্ক: সিলেটের খাদিম এলাকায় শাহপরাণ (র.) মাজারে ওরস চলাকালে আলেম-জনতার সঙ্গে দুর্বৃত্তদের সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ভোর পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টাব্যাপী দুপক্ষে সংঘর্ষ চলে। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৩ দিন থেকে শাহপরাণ (র.) মাজারে বার্ষিক ওরস চলছিল। এই ওরসকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর মাজারের আশপাশ এলাকায় মাদকের আসর বসে। এর পাশাপাশি নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চলে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে সিলেটের আলেম সমাজ-শাহপরাণ মাজার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে ওরসের নামে কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ যেন না হয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে কমিটির নেতৃবৃন্দ মাজারে কোনো অনৈতিক কার্যকলাপ হবেনা বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এর পাশাপাশি মাজারে ওরসকে কেন্দ্র করে গান-বাজনা বন্ধ করারও ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে ওরস চলাকালীন সময় কেউ যেন বিশৃঙ্খলা না করতে পারে, সে জন্য আলেম সমাজের প্রতিনিধি দল মাজার এলাকায় সতর্ক পাহারা দেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার দিবাগত রাতেও তারা মাজারের মসজিদের সিঁড়িতে পাহারায় থাকেন।
এ সময় মাথায় লাল কাপড় বাধা কিছু লোক হঠাৎ তাদের ওপর হামলা চালায়। মাদরাসার ভীত-সন্ত্রস্ত ছাত্র-শিক্ষকরা মসজিদের ভেতরে আশ্রয় নেন। হামলাকারীরা বাইরে অবস্থান নিয়ে তাদেরকে ঘেরাও করে রাখে।
এদিকে, খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী হরিপুর এলাকার শতাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে মসজিদে আশ্রয় নেওয়া ছাত্র-শিক্ষককে উদ্ধার করেন। তারা ওরসে আসা লোকজনের তাবুগুলো ভেঙে দেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে দুপক্ষের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষের ঘটনায় ৪০ জন আহত হন।পরে রাত সাড়ে ৪টার দিকে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
হামলার ঘটনায় আলেম-সমাজের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও উত্তেজনা শুরু হওয়া মাত্রই তারা সেখান থেকে চলে যান। এর ফলে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হয়ে ওঠে।’
তবে এ বিষয়ে মাজার কমিটির কারো বা পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি এখনও।
শাহপরান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ চৌধুরী হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত মাজারে হামলা চালায়। তখন মাজারে ওরস চলছিল। দুর্বৃত্তরা মাজারে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ করে ভাঙচুর চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। দুর্বৃত্তদের আটকাতে গেলে পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন আহত হন।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় কারা জড়িত তা এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। তবে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।