ভিডিও রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

একটি ঘরের জন্য ষাটোর্ধ্ব রাহেলার আকুতি

একটি ঘরের জন্য ষাটোর্ধ্ব রাহেলার আকুতি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) থেকে জিল্লুর রহমান ঃ স্বামী পরিত্যক্তা ষাটোর্ধ্ব রাহেলা বেগমের জীবন কাটছে জরাজীর্ণ সরকারি পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টারে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া অসহায় রাহেলার জীবন সংগ্রামের শেষ কোথায়, কেউ জানে না!

জানা গেছে, রাহেলার প্রথম স্বামী চান মিয়া এক ছেলে সন্তান রেখে মারা যান। পরবর্তীতে রাহেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার সাতপাড়া গ্রামের শুকরান আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। এরপর দ্বিতীয় স্বামীর সংসারেও তার একটি পুত্র সন্তান হয়। রাহেলার দ্বিতীয় বিয়ের ৩/৪ বছর পর ১ম পক্ষের ছেলে আব্দুর রহিমের বিয়ে দেন। রাহেলার প্রথম সন্তান রহিম ২ বছরের এক পুত্র সন্তান রেখে মারা যান। এ সময় রাহেলার ২য় স্বামীর পক্ষের সন্তান বাবলু মিয়ার বয়স ৬ বছর। বিয়ের ৬ বছর সংসার করার পর স্ত্রী-সন্তানকে রেখে নিরুদ্বেশ হয় রাহেলার ২য় স্বামী শহিদুল। এ সময় ঘরে এক পুত্র ও এক নাতির ভরণপোষণের দায়িত্ব পরে রাহেলার উপর।

রাহেলা জীবন জীবিকার তাগিদে সাত পাড়া গ্রাম থেকে দ্বিতীয় পক্ষের সন্তান ও ১ম পক্ষের মৃত সন্তানের ছেলে আমিরুল ইসলামকে নিয়ে উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজারে আসে। এসময় তার কোথাও থাকার স্থান না হওয়ায় রানীগঞ্জের দক্ষিণ দেবীপুর গ্রামে অবস্থিত সিংড়া ইউনিয়নের পরিত্যক্ত বিএস কোয়ার্টারে আশ্রয় নেয়। 

রাহেলার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি একজন ভূমিহীন আমার জায়গা জমি না থাকায় কোয়ার্টারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখে পরিস্কার করে বসবাস শুরু করি। প্রায় দেড় যুগ পার হয়ে গেছে কিন্তু এখানে বসবাস করলেও জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। কারণ ঝড়বৃষ্টি হলেই ঘরবাড়ি নড়ে ওঠে। তখন জীবন বাঁচাতে কোয়ার্টার ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে হয়। ঝর বৃষ্টি থামলে আবার কোয়ার্টারে আসি। উপর থেকে চুয়ে চুয়ে পানি পরে।

আরও পড়ুন

ছাদ ঢালাইয়ের সিমেন্টও খসে পড়ে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙে পড়বে! একটা ঘরের জন্য এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে অনেকদিন ঘুরেছি। লাভ হয়নি। কিছুদিন আগেও ইউএনও আমাদের দেখে গেছেন। আশ্রয়নের ঘর দিতে চেয়েছেন। হোটেলে, মানুষের বাড়িতে কাজ করতে করতে আমার হাত পায়ে ঘা হয়ে গেছে। এখন কেউ আগের মত আর কাজ দিতেও চায় না। এভাবেই টুকটাক কাজ করে, এখানে ওখানে চেয়ে খেয়ে বেঁচে আছি। এই বয়সে আর পারিনা। ছেলেটি বৌ সন্তান নিয়ে ঢাকায় কোন রকমে জীবন পার করছে, সংসারই ঠিক মতো চলে না, আমাকে দেখবে কেমনে? নাতিটা হোটেলে হোটেলে মেসিয়ারের কাজ করে কোন রকমে চলে।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা পরিত্যক্ত ভবনগুলো পরিদর্শন করেছি। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ওখানে বসবাসরত ভূমিহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঘন কুয়াশায় এক্সপ্রেসওয়েতে ৭ যানবাহনের সংঘর্ষ, আহত ৫

আইনজীবী আলিফ হত্যা : তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ 

আজও খুব অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস

বাংলাদেশের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত 

সমালোচনার পর কমলো বিপিএল মিউজিক ফেস্টের টিকিটমূল্য

ব্রাজিলে বাস-ট্রাক সংঘর্ষে নিহত ৩৮