ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই লেবাননের রাজধানী বৈরুতে মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) আরও শক্তিশালী বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ এই হামলা চালানোর আগে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক্সে পোস্ট দিয়ে বৈরুতের বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেয়। পোস্টটিতে বলা হয়, হামলার জন্য যে এলাকা লক্ষ্য করা হয়েছে সেখান থেকে বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালায় ইসরায়েল। ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও লেবাননে পাল্টা হামলা শুরু করেছে।
গত ১৭ অক্টোবর হিজবুল্লাহর সদস্যদের ওয়াকিটকি হিসেবে পরিচিত কয়েক শ পেজারে একসঙ্গে বিস্ফোরণ হয়। এতে নিহত হন অন্তত ১২ জন এবং আহত হন প্রায় তিন হাজার মানুষ। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হিজবুল্লাহ, তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ স্বীকার কিংবা প্রত্যাখ্যান- কোনোটিই করেনি।
পেজার বিস্ফোরণের দু’দিন পর থকে ইসরায়েলে বিমান অভিযান শুরু করে আইডিএফ। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই অভিযানে এরই মধ্যে হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা হাসান নাসরুল্লাহ ও বেশ কয়েক জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। কেবল রোববারের হামলাতেই নিহত হয়েছেন ১০৫ জন।
মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। সম্প্রতি হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরানের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড।
তারা বলছে, ইসরায়েল যদি এই হামলার জবাব দেয় তবে আরও হামলা চালানো হবে। ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরানের রাস্তায় উদযাপন করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে।
ইরান এই হামলার অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, নেভাতিম ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। যেগুলো একের পর এক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে দেখা গেছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা যে দুটি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে সেগুলোর মধ্যে একটি ধারণ করা হয়েছে আরাত আন-নাকাব শহর থেকে। এটি বিমান ঘাঁটির ঠিক দক্ষিণ দিকে অবস্থিত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।