উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন তরমুজ খেয়ে

প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২৩, ১২:০৭ রাত
আপডেট: মার্চ ২১, ২০২৩, ১২:০৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

তরমুজে যে পটাশিয়াম থাকে তা মানব দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। হৃদপিন্ডের সুস্থতা রক্ষা করে। পুষ্টিবিদদের মতে তরমুজ মানব দেহের হৃদরোগ, হাঁপানী, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক) রোগ ও ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলোকে সঠিক এবং সুস্থ রাখে।

তাজা তরমুজে লাইকোপিন, বিটা-ক্যারোটিন, লুটেইন, জিয়াজেস্থিন, ক্রিপ্টোজেস্থিন উপাদান থাকে। এসব ফ্লেভনয়েডস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে দেহের ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। ফলে পাকস্থলি, ফুসফুস, স্তন, প্রোস্টেট, জরায়ু ইত্যাদির ক্যান্সারের প্রবণতা কমে যায়। তরমুজে লাইকোপেন উপাদানটি সূর্যের আলোর বেগুনি রশ্মির হাত থেকে আমাদের চামড়াকে রক্ষা করে। তরমুজ দেহে চর্বি জমা হওয়ার ব্যবস্থা কমিয়ে দেয়। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। তরমুজে বিটা ক্যারোটিন ও ম্যাগানিজ থাকে। যা চামড়ার রোগ প্রতিরোধ ও মসৃণ করে। তরমুজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায়।

ভিটামিন সি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সুষ্ঠু রক্ত সঞ্চালনে সাহায্য করে, দাঁতের সমস্যা, চামড়ার সৌন্দর্য, মুখের ঘাঁ, সর্দি, গরম ও ঠান্ডা জ্বর প্রতিরোধে বেশ উপকার করে। তরমুজ অত্যান্ত রসালো ফল বলে মানব দেহের বৃক্ক বা কিডনীর জন্য খুবই উপকারী। তরমুজে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, রক্তের ইনসুলিনকে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদদের মতে ডায়াবেটিস রোগীরা তরমুজ খেতে পারবেন। তবে নিজ নিজ চিকিৎসকের পরামর্শ মতে। তরমুজের আঁশ ও পানি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। তরমুজের পটাশিয়াম মানব দেহের হাঁড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত করে।

তাছাড়া দেহের ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে। হাঁড়ের জোড়াগুলোকে মজবুত করে। তরমুজে থাকে বিটা ক্যারোটিন। যে কারণে তরমুজের শাঁস লাল হয়। এ উপাদানটি চোখের নানা সমস্যা দূর করে। চোখকে সুস্থ সবল রাখে। চোখের দৃষ্টি শক্তি প্রখর রাখে। তরমুজে প্রাকৃতিক ভাবে অতি অল্প পরিমাণে চর্বি থাকে। তাই পেট ভরে তরমুজ খেলেও ওজন বাড়ে না। তরমুজ খেলে অ্যাক্সিডেটিভ স্টেসজনিত অসুস্থতা কমে যায়। তরমুজে সিট্রোলিন নামক বিশেষ অ্যামাইনো এসিডের উপাদান রয়েছে। যা কিডনীর জন্য অত্যান্ত উপকারী এবং কিডনীতে পাথর জমতে দেয় না ফলে কিডনী সুস্থ এবং সবল থাকে। তরমুজে সিলিকা উপাদান থাকে যা নোখের সমস্যা ও ভঙ্গুরতা কমায় এবং সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি করে। তরমুজে অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহ নিরোধী হিসেবে ভালো কাজ করে তাই শরীরে প্রদাহ জনিত ব্যাথা কমতে সাহায্য করে যেমন বাতের ব্যাথা।
যাদের মুখে মেসতা বা ছোপ ছোপ কালছে দাগ আছে তাদের লিবারে সমস্যায় এমন দেখা দেয়। তারা নিয়মিত তরমুজ খান সমস্যা কমে আসবে। 

যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা নিয়মিত তরমুজ খান রক্তের চাপ কমে আসবে। কারণ তরমুজের পটাশিয়াম উচ্চ রক্ত চাপ কমিয়ে দেয়।যাদের হৃদপিন্ডে সমস্যা বা হৃদরোগ আছে বা যাদের বুক দড়ফড় করে তারা নিয়মিত তরমুজ খান উপকার পাবেন। তরমুজের সাইট্রলিন হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়।  চামড়ার সৌন্দর্য এবং তারুণ্য ধরে রাখতে তরমুজ বেশ উপকারী।

তবে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে বা বাজারে খোলা অবস্থায় রাখা কাটা তরমুজ খাবেন না। তরমুজ কেটে ফ্রিজে ভরে রাখবেন না। এতে খাদ্য উপাদান কমে যায়। যেকোন ফল কেটে খোলা অবস্থায় রাখবেন না।

এতে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়। তরমুজে শাঁস অধিক লাল করার জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম রং ভিতরে প্রবেশ করিয়ে থাকে এমন তরমুজ কিনবেন না খাবেন না। তরমুজ কাটার পর শাঁস হাতে লাগলে কিছু রং হাতে লাগে এ তরমুজটি খাবেন না। তরমুজ কেনার সময় দেখে নিবেন যেন তরমুজ তাজা এবং পাকা হয়। পাকা তরমুজের ওজন তার আকারের চেয়ে বেশী হয় এবং ঠনঠন শব্দ করে। তরমুজের যে অংশে মাঠির স্পর্শে থাকে সে অংশ সাদা বা সবুজ হলে বুঝবেন তরমুজটি পাকা নয়। কিন্তু হলদে হলে পাকা ও পরিপক্ক। দেশীয় ফল খান সুস্থ থাকুন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়