কোন কাজগুলো সন্তানের সামনে একেবারেই করবেন না?
লাইফস্টাইল ডেস্ক: স্কুলে গিয়ে শিশু পড়াশোনা করে। পড়াশোনার পাশাপাশি অন্যের সঙ্গে মিশতে, কথা বলতে এবং আরও অনেক কিছুই শেখে। তবে শিশুর শিক্ষা শুরু হয় পরিবার থেকেই। বাবা-মা, বড়দের আচার-আচরণ কিন্তু খুদেরা সকলের অজান্তেই অনুসরণ করে। অভিভাবকদের সঠিক শিক্ষা যেমন শিশুর বড় হওয়ার পথে আদর্শ হতে পারে, তেমনই তাদের ভুল শিশুর মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা ও স্বার্থপরতার জন্মও দিতে পারে। জেনে নিন সন্তান পালনের সময়ে কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বায়না করলেই জিনিস নয়: খেলনা থেকে আইসক্রিম, চকোলেট পাওয়ার জন্য শিশু তো বায়না করবেই। তবে সব চাহিদা তখনই পূরণ করলে কি সন্তানের ভাল হবে? আজ একটা গাড়ি কিনে দিলেন। দু’দিনেই দেখা গেল সে গাড়িটা নিয়ে খেলে ভেঙে হয়তো প্লেনের জন্য বায়না করছে। আপনি একটা প্লেন কিনে দিলে তৃতীয় দিন বলবে মিউজিক ক্যাকটাস চাই। খুদে যখন জানবে, চাইলেই সব কিছু পাওয়া যায়, তখন কিন্তু সে কোনও জিনিসেরই কদর করতে শিখবে না। তার মধ্যে একটা সময় গিয়ে বায়না ও জেদ লাগামছাড়া হয়ে উঠবে। তাই শুরু থেকেই তাকে যে কোনও জিনিসের যত্ন করতে শেখাতে হবে। এখনই চাই বললেই যে জিনিস পাওয়া যায় না, সেটাও বিভিন্ন ভাবে বোঝাতে হবে। না হলে কিন্তু পরে আপনার সন্তানই সমস্যায় পড়বে।
নিয়মানুবর্তিতার শিক্ষা: সন্তান কখন ঘুমাবে, খেলবে, খাবে তা নিয়ে অনেক পরিবারেই মাথাব্যথা থাকে না। এটা কিন্তু ঠিক নয়। সন্তান একটু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু তাকে নিয়মানুবর্তিতা শেখানো জরুরি। কড়া নিয়মের জালে তাকে বেঁধে ফেলতে হবে, এমনটা কখনওই নয়। কিন্তু কখন ঘুম থেকে উঠতে হয়, কখন দাঁত পরিষ্কার করতে হয়, গোসল, খেলা, টিভি দেখার সময় নিয়ে তাকে একটু একটু করে রুটিনের মধ্যে রাখার চেষ্টা করলে, খুদেরই সুবিধা হবে।
বাবা-মায়ের আচরণ: শিশু কিন্তু বাবা-মা ও বাড়ির বড়রা কোন কাজ করেন, কী ভাবে কথা বলেন সবটাই অনুসরণ করে। অনুকরণ করারও চেষ্টা করে। তাকে ভাল শিক্ষা দিতে গেলে নিজেদের আচরণেও তার ছাপ থাকতে হবে। খুদেকে বলছেন বেশিক্ষণ টিভি, মোবাইল দেখলে চোখ খারাপ হয়ে যায়, এ দিকে নিজেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল নিয়ে বসে আছেন। তা হলে সে কী শিখবে? তাকে বলছেন চাউমিন, বার্গার খাওয়া ভাল না। বাড়িতে প্রায়ই আনছেন বাইরের খাবার। খুদে নিজেই ধন্দে পড়ে যাবে কোনটা ঠিক।
আরও পড়ুনঅন্যকে সাহায্যের শিক্ষা: সন্তান পালনে শুধু আদর নয়, দিতে হবে প্রয়োজনীয় শিক্ষাও।
যতই সে ছোট হোক, অন্যের কথা শুনতে হয়, তার পাশে থাকতে হয় তা কিন্তু বোঝাতে হবে। নিজের জিনিস ভাগ করে নেওয়ার অভ্যাস তৈরি করা কিন্তু অভিভাবকের দায়িত্ব। বাবা-মা যদি বড়দের সম্মান করেন সে-ও তাই শিখবে। আর অভিভাবকেরাই যদি তা না করেন, সেটাও খুদে ঠিক বলেই মনে করবে।
প্রত্যাশা পূরণের চাপ: সন্তান ভাল মানুষ হবে শুধু এটুকুই নয়, কোনও কোনও বাবা-মা চান, সন্তান পড়াশোনা থেকে আঁকা, সাঁতার অন্য সব কিছুতেই তুখোড় হবে। খুদে ভাল ফল করবে, সে জন্য তাকে পড়ানো এক রকম বিষয়। কিন্তু সকলের মধ্যে প্রথম হতেই হবে, পরীক্ষায় দু’নম্বর কম হলে বকুনি, মারধর অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। অনেক সময়ে সন্তান ভাল ফল না করলে বাবা-মায়েরা কথা বলা বন্ধ করে দেন বা নিজে খাওয়া বন্ধ করে দেন। এগুলি খুদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। প্রত্যাশা পূরণের চাপ তার উপর চেপে বসে।
মন্তব্য করুন