ভিডিও রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সিয়াম সাধনার মাহে রমজান

সিয়াম সাধনার মাহে রমজান

প্রতিবছরের মতো রমজানের চাঁদ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে যায় সিয়াম সাধনার মাহে রমজান। স্বাগত মাহে রমজান। বাংলাদেশ ও বিশ্বের মুসলমানদের দুয়ারে আবারও উপস্থিত হয়েছে পবিত্র রমজান-রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের বাণী নিয়ে। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে এ তিন ধাপে ইবাদত-বন্দেগি করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রশান্তি লাভ করবে মুসলমানরা।

সারাবছর জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারে তারা যে পাপ করেছে, তা থেকে ক্ষমা পাওয়ার মোক্ষম মাস হলো এ রমজান। সিয়াম সাধনার দ্বারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে তারা যে নাজাতের পথ খুঁজবে এতে কোন সন্দেহ নেই। হাজার রজনীর চেয়ে শ্রেষ্ঠ রজনী লাইলাতুল কদর রমজান মাসকে করেছে বিশেষভাবে মহিমান্বিত।

এ রাতেই রাব্বুল আলামিন তার প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) ওপর সর্বশেষ ঐশী গ্রন্থ পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। কোরআনের শিক্ষা হলো বিশ্বাসী মানুষকে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক জীবনে অশেষ কল্যাণ দান করা। কৃচ্ছসাধন ও আত্মসংযমের এ মাসে তাই আল্লাহর প্রদর্শিত পথে চলার ওয়াদা করে মানুষ, সবরকম গুণাহ মাফ করে দেয়ার আকুল প্রার্থনা জানায়। এ মাসে আল্লাহ তার বান্দাদের কঠোর ত্যাগ, ধৈর্য, উদারতা ও সততা প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ভোগবিলাস, অপচয় এবং অসংযমের অসঙ্গত পথ থেকে মানুষকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয় এ মাস। সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য রচনাকারী পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিল এ মহিমান্বিত মাসে। আত্মসংযমের মাধ্যমে বিশ্বাসীরা যাতে ইন্দ্রিয় ও আত্মিক উভয় দিক থেকে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে নিয়োজিত হয় সে উদ্দেশ্যে সব সুস্থ ও সাবালাক নর-নারীর জন্য সিয়াম সাধনাকে অবশ্য পালনীয় ইবাদত হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ পবিত্র মাসে বিশ্বাসী মানুষ যা কিছু অকল্যাণকর তা পরিত্যাগ করে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের প্রয়াস পায়। মাহে রমজানের শিক্ষা আত্মসংযমের মহিমামন্ডিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, ঐশী নির্দেশ লংঘন করে এ মাসকে কেউ কেউ অসংযম ও লোভ-লালসা পূরণের সুযোগ হিসেবে বেছে নেয়। সিয়াম সাধনায় নিয়োজিত মুসলমানসহ সবমানুষের জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করে তাদের অসংযত মনোভাব। রোজার মাসে নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে রোজাদারদের কষ্টের মুখে ঠেলে দেওয়া সামাজিক দৃষ্টিতে যেমন গর্হিত, তেমন ধর্মীয় দিক থেকেও গুণাহ বলে বিবেচিত।

আরও পড়ুন

মাহে রমজানে যারা নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়ানোর সুযোগ হিসেবে বেছে নেয় তাদের কর্মকান্ড কোনভাবেই ধর্মীয় শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ গর্হিত কর্মকান্ড দমন সরকারের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। প্রশাসন এক্ষেত্রে কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে তার ওপর রোজাদারদের স্বস্তি যেমন নির্ভরশীল তেমনি নির্ভরশীল সরকারের সুনামও।

প্রতি বছরের মতো এ বছরও নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়ে আছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেন বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে, কেন সিয়াম সাধনার মাসে ব্যবসায়ীদের একাংশ মুনাফাখোরিতে লিপ্ত হচ্ছে তা সামলে আনতে সরকারকে অবশ্যই দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে। আমরা লক্ষ্য করেছি রমজান মাসে আইনশৃঙ্খলার অবনতি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রেও সরকারকে তীক্ষè নজর রাখতে হবে। পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে যাতে কোনভাবেই চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য অনুভূত না হয় সে ব্যাপারেও আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে যত্নবান হতে হবে।

ঈদের আগেই মহাসড়কগুলোর মেরামত কাজ যাতে সুসম্পন্ন হয় সেদিকেও প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। সিয়াম সাধনার মধ্যেই বিপণি বিতানগুলোয় শুরু হবে ঈদের প্রস্তুতি মূলক কেনাকাটা। মানুষ যাতে স্ঠুুভাবে কেনাকাটা করতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার কথা এখনই ভাবতে হবে।

তবে বাহ্যিক আয়োজনগুলোর বাইরে রমজান যদি প্রত্যেক মুসলিমের মনে নতুন আলো জ্বালাতে পারে, সৎ মানুষ হিসেবে সবাইকে নতুন করে উজ্জীবিত করতে পারে, সেটি হবে প্রকৃত পাওয়া। রমজান যে ত্যাগ-তিতিক্ষা, সহনশীলতা, পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও শ্রদ্ধাবোধের বাণী বয়ে আনে, তার চর্চাই সর্বাগ্রে হওয়া উচিত।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আন্দোলনে হামলা-হুমকি-র‌্যাগিংসহ বিভিন্ন অপরাধে রাবির ৩৩ শিক্ষার্থীকে শাস্তি

ঘন কুয়াশায় এক্সপ্রেসওয়েতে ৭ যানবাহনের সংঘর্ষ, আহত ৫

আইনজীবী আলিফ হত্যা : তদন্ত কমিটির সব সদস্যের পদত্যাগ 

আজও খুব অস্বাস্থ্যকর ঢাকার বাতাস

বাংলাদেশের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত 

সমালোচনার পর কমলো বিপিএল মিউজিক ফেস্টের টিকিটমূল্য