জাতীয় পার্টিকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সমালোচনা প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, ‘হাতি গর্তে পড়েছে মনে করে চামচিকা লাথি মারছে। তাদের অনেকের রাজনীতি করোর কোনো অভিজ্ঞতা নেই।
পানিতে না নামলে তো সাঁতার কাটা শেখা যায় না। তারা তো এখনো পানিতেই নামেনি। তারা আমাদের বিরুদ্ধে অনেক ধরনের কথা বলছে। আমরা তাদের কোনো আস্ফালনে ভয় পায় না। তারা ভবছে, জাতীয় পার্টি না থাকলে জাতীয় পার্টির ভোটগুলো তারা পাবে। কিন্তু না আমরা না থাকলে আমাদের ভোটগুলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো বড়দলগুলো পাবে।’
শুক্রবার (১ নভেম্বর) জাতীয় পার্টির বনানী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামীকাল জাতীয় পার্টির সমাবেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যোগ দিতে পারে এমন অভিযোগ প্রশ্নে জিএম কাদের বলেন, ‘কোনো লোক আসলে আমরা কি বেছে বেছে বাদ দিতে পারবো? আর এলে ওদের ক্ষতিটা কী? তারা তো বাংলাদেশের নাগরিক, তারা যাদি আসতে চায়।’
এ সময় কাকরাইলের জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিচার দাবি করেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি জনগণের জন্য রাজনীতি করছে ভবিষ্যতেও করবে। কোনো শক্তিই তাদের দমাতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থাকা সত্বেও তাদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে মামলা দেওয়া হচ্ছে। বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আন্দোলন হলেও দেশ এখনো দুইভাগে বিভক্ত। এ সময় জাতীয় পার্টিকে কাছে টানার জন্য প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানান জিএম কাদের।
২০২৪ সালে জাতীয় পার্টিকে হাসিনা সরকার জোর করে নির্বাচনে এনেছিল বলে অভিযোগ করেন জিএম কাদের। তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠি অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে, আমরা আওয়ামী লীগের দোসর, এসবের অপবাদের সত্যতা নেই। এর পেছনে ষড়যন্ত্র চলছে, এসবের সঙ্গে কিছু বুদ্ধিজীবীও জড়িত।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয় আওয়ামী লীগের দোসর? কীভাবে ২০০৮ সালে নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। সেই শেখ হাসিনার সরকারে আমি মন্ত্রী ছিলাম। তাই বলে আমরা শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ ও অন্যায়ের ভাগিদার হবো কেন? সেই সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী থাকাকালে হজযাত্রীদের খারাপ বিমানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার প্রতিবাদে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলাম।’
জাতীয় পাার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে জিএম কাদের বলেন, ‘সরকার যেমন নির্বাচনে যেতে চাপ দিত, তেমনি অন্যদিক থেকেও জোর করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সবাই আওয়ামী লীগকে বৈধতা দিয়েছিল। ২০১৪ ও ’২৪-এর নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে জোর করে নির্বাচন করতে বাধ্য করেছিল।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেই কেন অপরাধ হবে? সাংবিধানিক অধিকার এটা। শেষ ৩টি নির্বাচন নিয়ে তথ্য ও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। বিএনপি-আওয়ামী লীগের হামলা, মামলা ও দলীয় বিভক্তির রাজনীতির শিকার জাতীয় পার্টি হয়েছে বলেও দাবি করেন জি এম কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন- জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও স্ত্রী শেরিফা কাদেরসহ অনেকে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।