পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে সবশেষ দুই বাংলাদেশির প্রাণহানি ঘটেছে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে’। এসব ঘটনায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানোর কথাও তিনি বলেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভারতের সীমান্তরক্ষীরা এখন ‘প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্রের’ ব্যবহার বাড়িয়েছেন। তা না হলে মৃত্যুর সংখ্যা ‘আরও বেশি হত’।
গত সোমবার লালমনিরহাটে এবং মঙ্গলবার নওগাঁ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে এদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, প্রথম ঘটনাটি ঘটে লালমনিরহাটে ২৫ মার্চ রাত আনুমানিক ১০টার দিকে। সেখানে কিছু বাংলাদেশি কাঁটাতারের বেড়া কেটে সীমান্তের ওপারে যায়।
“বিএসএফের ভাষ্য হচ্ছে, যখন বিএসএফ তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে, তখন তারা সংখ্যায় অনেক বেশি ছিল, তারা বিএসএফকে ঘেরাও করে- এটি হচ্ছে বিএসএফের ভাষ্য।
“বিএসএফ তখন গুলি ছোঁড়ে। গুলি ছোঁড়ার কারণে দুজন আহত হয়। একজন আহত বাংলাদেশে চলে আসে এবং আরেকজন আহতকে সেখানে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে পরে মারা যায়।” মন্ত্রী বলেন, আরেকটি ঘটনা ২৬ মার্চ সকালে, নওগাঁ সীমান্তে।
“একই ধরনের অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। আমাদের পক্ষ থেকে, বিজিবির পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, সীমান্ত বৈঠক হয়েছে।”
‘প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্র’ ব্যবহারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করার কথা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, “এখন কিন্তু আগের তুলনায় অনেক বেশি নন লিথাল উইপন ব্যবহার করা হয়। সে কারণে রাবার বুলেটে বা ছররা গুলিতে অনেকে আহত হন, পরে বাংলাদেশে চলে আসে।
“‘প্রাণঘাতি নয় এমন অস্ত্র’, আগের তুলনায় অনেক বেশি ব্যবহার করা হয়। যদি সেটি না হত, তাহলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হত। তবে, আমরা চাই সেখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা যাতে না হয়। সরকারের পক্ষ থেকে বিজিবি প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পতাকা বৈঠকও হয়েছে।”
প্রাণহানির ঘটনায় বিএসএফ যে ভাষ্য দিচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তের দাবি করার বিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “সেটি আমাদের পক্ষ থেকে, বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এবং সাথে সাথেই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পতাকা বৈঠকও হয়েছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষ কাজ করছে।”
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গুলিতে প্রাণহানির কোনো প্রতিবাদ জানানো হবে কি-না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “দেখুন, বিজিবি এবং বিএসএফ এনগেজমেন্টের মধ্যে আছে। আমরা মনে করি সেখানেই সমস্যাটা সমাধান করা সম্ভব।”
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।