সদরঘাটে লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নিহত ৫
রাজধানীর সদরঘাটে পন্টুনে বাঁধা দুই লঞ্চের মাঝ দিয়ে আরেকটি লঞ্চ ঢুকানোর সময় একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে নারী-শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঈদের দিন আজ বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটার দিকে ১১ নং পন্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার ফাইটার আনিসুর রহমান জানান, সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের অ্যাম্বুলেন্সে করে গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজন সেখানে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে নৌপুলিশের সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘাটে বাঁধা টিপু-১৩ ও তাশরিফ-৪ লঞ্চের মাঝ দিয়ে ঢুকতে যায় ফারহান-৬ নামের লঞ্চটি। এ সময় ফারহান ধাক্কা দেয় টিপুকে আর টিপুর ধাক্কায় তাশরিফের রশি ছিঁড়ে যায়। রশির বাড়িতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন- মো. বেলাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬) ও তাদের শিশুসন্তান মাইসা (৩)। তাদের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায়। নিহত অন্য দুজন হলেন- ঠাকুরগাঁওয়ের রবিউল ও পটুয়াখালীর রিপন হাওলাদার।
সদরঘাট নৌ থানার উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, মরদেহগুলো মিডফোর্ড হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
লিয়াকত আলী বলেন, আজ বিকেল ৩টার সময় সদরঘাটে বার্থিং করা তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচজন মানুষ আহত হন। আমরা দ্রুত আহতদের স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। তবে হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার তাদের মৃত ঘোষণা করেন। একই পরিবারের তিনজন রয়েছেন স্বামী স্ত্রী এবং তাদের সন্তান।
তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন তারা সম্ভবত তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য লঞ্চের খোঁজ করছিলেন। ওই অবস্থায় তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে তাদের গায়ে লাগে। লঞ্চের রশি অনেক মোটা এবং ভারী। এটি যখন ছিঁড়ে যায় খুবই স্পিডে ছিড়ে।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের বার্থিং সারেং শেখ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, লঞ্চের দড়ি ছিঁড়ে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলেই পাঁচজন মারা গেছেন। আহত হয়েছে কয়েকজন।
এদিকে সদরঘাট ট্রাফিক জোনের যুগ্ম কমিশনার জয়নাল আবেদীন বলেন, এমভি তাসরিফ-৪ ও এমভি পূবালী-১ নামের দুটি লঞ্চ দড়ি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। এসময় এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি পার্কিং করার জন্য ওই দুই লঞ্চের মাঝখান দিয়ে ঢুকলে ধাক্কা লেগে এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চটির ওঠানামার দড়ি ছিঁড়ে যায়। এতে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেলের ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-ভোলা রুটের এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চে উঠছিলেন পাঁচ যাত্রী। এসময় ফারহান-৬ লঞ্চের ধাক্কায় তাশরিফের দড়ি ছিঁড়ে গেলে তারা আহত হন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।