ভিডিও

ইপিজেডের ৩০ ভাগ জায়গা ব্যবহার করে ৩৩৩ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৪, ১০:০৬ রাত
আপডেট: মে ২৫, ২০২৪, ১০:০৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ইপিজেডের মাত্র ৩০ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করে কমপক্ষে ৩৩৩ মেগাওয়াট অতিরিক্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ডেইলি স্টার সেন্টারে চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সোলার নেট মিটারিংয়ের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়- ইপিজেড কর্তৃপক্ষ নেট মিটারিং ব্যবস্থায় অযৌক্তিক প্রতিবন্ধকতা দূর করে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা সম্ভব। এ ছাড়া, সৌর উপকরণ আমদানির ওপর করের বোঝা কমানোর সুপারিশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ইশতিয়াক বারী। তিনি জানান, দেশে গত ৭ বছরে মাত্র ১১০ মেগাওায়াট সৌর বিদ্যুৎ নেট মিটারিং পদ্ধতিতে যুক্ত হয়েছে, যার শতকরা ৫৫ ভাগ এসেছে বাণিজ্যিক ভবনের মাধ্যমে। গবেষণায় দেখা যায়, নেট মিটারিংয়ের মাধ্যমে ৫৫ দশমিক ৬ ভাগ শিল্প উৎপাদনে কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমেছে। রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলে নেট মিটারিংয়ের সুবিধা দেওয়া হলে মাত্র ৩০ ভাগ এলাকা থেকে প্রায় ৩৩৩ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি অর্থায়ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ। ধারাবাহিক গবেষণার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে বিশেষত ইপিজেড এলাকায় সোলার নেট মিটারিংয়ের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা বিষয়ে একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে।

এম জাকির হোসেন খান বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং ইপিজেডগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে নেট মিটারিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেলে, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা বাড়বে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এতে দেশের টেকসই অর্থনীতিকে নিশ্চিত করবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সদস্য (পাওয়ার) আবুল খায়ের মোহাম্মদ আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, ইপিজেড এলাকায় নেট মিটারিং বাস্তবায়নের জন্য হুইলিং চার্জের একটি অংশ যদি ইপিজেড কর্তৃপক্ষকে দেওয়া যায়, তাহলে উভয়পক্ষ লাভবান হবে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। এরই অংশ হিসেবে টেস্টিং ল্যাব তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে অনেকদিন ধরেই নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। তাই বিকল্প হিসেবে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। গোলটেবিল আলোচনায় সোলার ও রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী নূরুল আকতার বলেন, অনেক শিল্প উদ্যোক্তাই সোলার নেট মিটারিং সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন না। সম্ভাবনাময় এই সেক্টরে নেট মিটারিং প্রতিষ্ঠা করা গেলে, শিল্প কারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা অনেকটাই মিটবে।

অনুষ্ঠানে নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতের উদ্যোগ সোল শেয়ারের পরিচালক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, কোনো ইপিজেডে এলাকাতেই নেট মিটারিং ব্যবস্থা চালু নেই। এটি করা গেলে বিদ্যুতের ঘাটতি অনেকটা দূর হবে। এটি বাস্তবায়নে পাবলিক, প্রাইভেট, পার্টনারশিপ (পিপিপি) চালু করতে হবে। এ ছাড়া, সোলার নেট মিটারিংয়ের কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর দাবি জানান ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) পরিচালক সাইফ উদ দৌলা।

এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ বলেন, বেপজা নিজেই বিদ্যুৎ কারবারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, যা সংশ্লিষ্টখাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এক্ষেত্রে অযৌক্তিক প্রতিবন্ধকতা ও করের বোঝা লাঘব করে নেট মিটারিং ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে রপ্তানিখাতে সহনশীল অগ্রগতি আনা সম্ভব বলে মত দেন আলোচকরা।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ডেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন মিয়া, শ্রেডার সাবেক সদস্য সিদ্দিক জোবায়ের, পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দীন, ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীরসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাত সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা।

অনুষ্ঠান শেষে, চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভসহ ১২টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও তরুণ সংগঠনের উদ্যোগে নবায়নযোগ্য জ্বালানি সপ্তাহ (২৬ মে-১ জুন) বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS