প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের (আইএমও) মাধ্যমে ছোট দ্বীপ ও আফ্রিকান স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) জন্য বঙ্গবন্ধুর নামে সামুদ্রিক খাতে বৃত্তি চালু করতে চায়।’
আজ বৃহস্পতিবার গণভবনে আইএমও’র মহাসচিব আর্সেনিও অ্যান্তোনিও ডমিনগুয়েজ প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সৌজন্য করতে এলে তিনি বলেন, ‘আমরা আইএমও’র মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নামে ১০টি ক্যাডেট প্রশিক্ষণ বৃত্তি চালু করতে চাই।’
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আইএমও মহাসচিব প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন। বৃত্তি প্রাপ্তদের বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’এসময় আইএমও মহাসচিব নারী মেরিনার বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার প্রথম নারী মেরিনারদের নিয়োগ দিয়েছে এবং তাদেরকে নাবিক হতে অনুপ্রাণিত করেছে।’
এক মাসের মধ্যে ছিনতাইকৃত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ক্রুদের মুক্ত করতে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য আইএমও’র প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সামুদ্রিক পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইএমওকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির জন্য সমুদ্র পথ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গোপসাগরের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো একসঙ্গে সমুদ্র পথের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করছে। সমুদ্র পথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যান্য জায়গায় একই ধরনের উদ্যোগ নিন।’
বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলোর পাশাপাশি জাহাজ নির্মাণ এবং এর রিসাইক্লিং শিল্প নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সরকার জাহাজ নির্মাণ এবং এর রিসাইক্লিং শিল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে। আমরা জাহাজ নির্মাণ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করেছি এবং এটি উল্লেখযোগ্য। সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত জাহাজ নির্মাণে নিয়োজিত থাকায় বাংলাদেশ ইউরোপের দেশগুলোতে জাহাজ রপ্তানি করছে।’
বাংলাদেশ গত জুনে হংকং কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কনভেনশনে নির্ধারিত মানদ- অনুসরণ করতে হবে অন্যথায় ইউরোপ কোনো দেশের কাছে তাদের পুরোনো জাহাজ বিক্রি করবে না।’
প্রধানমন্ত্রী হংকং কনভেনশন অনুসরণ করে পরিবেশ রক্ষার জন্য জাহাজ নির্মাণ এবং পুনর্ব্যবহারে তার প্রচেষ্টা বাড়ানোর জন্য আইএমওর কাছে সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানান।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশকে বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও খরার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে বাংলাদেশের সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে।’
প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।