ভিডিও

সংসদে বেনজীরের সমালোচনা

সংসদে বেনজীরের সমালোচনা

প্রকাশিত: জুন ০৫, ২০২৪, ১১:৫৭ রাত
আপডেট: জুন ০৬, ২০২৪, ১০:৩১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন


সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অভিযোগ এবং তাঁর দেশত্যাগ নিয়ে নানামুখী সমালোচনায় সরব হয়ে উঠেছিল জাতীয় সংসদ। বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু আলোচনার সূত্রপাত ঘটালেও একে একে অংশ নেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ও সরকারি দলের সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি তারানা হালিম। তবে তারানা হালিমের বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী ফ্লোর নেন। তিনি স্পিকারের কাছে জানতে চান, আলোচনা কীসের ওপরে হচ্ছে? এমন আলোচনায় কার্যপ্রণালি বিধির ব্যত্যয় ঘটছে বলেও উল্লেখ করেন চিফ হুইপ। এ পর্যায়ে সংসদের বৈঠকে সভাপতির আসনে থাকা ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু আলোচনার ইতি টানেন। এর পরে আর কাউকে বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয়নি।
বুধবার মাগরিবের বিরতির পরে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির বিষয়টিতে সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে আরও যারা বেনজীর আছেন, তারা আশকারা পাবেন। বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্ট উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলেই কী বিচিত্র!
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেনজীরের বিপুল সম্পদ গড়ে তোলার তথ্য তুলে ধরে মুজিবুল হক বলেন, বেনজীর যখন র্যা বের ডিজি ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন, তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেককে ভয় দেখিয়ে জমি কিনেছেন। তিনি কয়েক দিন আগে ৮০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বিদেশে চলে গেলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বেনজীর আহমেদ বিদেশে চলে গেছেন কিনা, তিনি জানেন না। তিনি জানবেন না কেন? বেনজীর ইমিগ্রেশন পার হয়ে গেছেন। সারাদেশে আলোচিত এই ব্যক্তি ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তা সরকারকে জানায়নি, তাহলে সব কর্মচারীকে বরখাস্ত করা উচিত।
মুজিবুল হক বলেন, বিরোধী দলের কোনো নেতা চিকিৎসার জন্য যখন যান, তখন ইমিগ্রেশনে তাদের দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। আর এ রকম একজন ব্যক্তি বিদেশে চলে যাবেন, সরকার জানবে না– তা হতে পারে না। এত বাহিনী, এত এজেন্সি তারা কী খবর রাখে? 
তিনি বলেন, সরকারের দায় নেই বললে মানুষ তা মানবে না। কারণ, এ সরকারের আমলে বেনজীর আহমেদের পদোন্নতি-পদায়ন হয়েছে। এই সরকারের আমলে দুর্নীতি করে তিনি এসব সম্পদ গড়েছেন। তাঁর দুর্নীতিতে প্রমাণিত হয়েছে, সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। এরপর অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান, পুলিশ বাহিনীর প্রধান– দেশ তো তাদের। লাখ লাখ আজিজ-বেনজীর সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে।
তারানা হালিম বলেন, সংসদ আজ এক জায়গায় দাঁড়িয়েছে। সরকারি দল, বিরোধী দল এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা একই ইস্যুতে একই সুরে দাবি তুলেছে। টাকা পাচারকারী, বাজার সিন্ডিকেটের সদস্যদের নাম সংসদে প্রকাশ করার দাবি জানান তারানা হালিম। 
তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের মধ্যে সিন্ডিকেটে জড়িতদের আত্মসমালোচনা করার তাগিদ দেন। তিনি বলেন, ‘যানবাহনে সিন্ডিকেট, রাস্তাঘাটে সিন্ডিকেট; বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না? সিন্ডিকেট। ‍ওমুকখানে সিন্ডিকেট, চালের গুদামে সিন্ডিকেট, বস্ত্র বিতরণে সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট কারা? আমরা জানতে চাই, তাদের নাম প্রকাশ করা হোক। আমরা জানতে চাই পানামা পেপারসে, প্যারাডাইস পেপারে কাদের নাম আছে।’
বেনজীর আহমেদের প্রতি ইঙ্গিত করে তারানা হালিম বলেন, এতক্ষণ যাঁর কথা বলা হলো, তাঁর মন খারাপ হলে দশটা বাড়ি কিনেছেন। আমাদের মন খারাপ হলে আমরা বড়জোর দু-একটা শাড়ি কিনতে পারি। 
তারানা হালিমের বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই সংসদে ফ্লোর নেন চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আলোচনাটা কীসের ওপর হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না। এটা কি সাধারণ আলোচনা, এটা কি বাজেট অধিবেশনের আলোচনা? আপনি পয়েন্ট অব অর্ডারে যদি একজনকে আধাঘণ্টা সময় দেন, তাহলে তো সংসদের কার্যপ্রণালি বিধি, নীতিমালা কোনোটাই মানা হচ্ছে না। আপনি তো (ডেপুটি স্পিকার) সাধারণ আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। এখানে অনেক এমপি বসে আছেন, তাদের মূল্যবান সময় আছে; কিন্তু আপনি তো পয়েন্ট অব অর্ডারে সাধারণ আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। পরে ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু বলেন, চিফ হুইপ সঠিক কথা বলেছেন। পয়েন্ট অব অর্ডারে নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর এমপিদের কথা বলার অনুরোধ করেন তিনি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS