সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এদিন বিকাল ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি বিদ্যমান রয়েছে। কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা হ্রাস করে কেবলমাত্র আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং মূসক (মূল্য সংযোজন কর) ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্যান্য সব শুল্ক ও কর অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করছি। এজন্য বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার সুপারিশ করছি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উল্লেখ করেন— সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক কর অব্যাহতি বিদ্যমান রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সব স্তরে কর অব্যাহতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্য সবাইকে রাজস্ব প্রদানে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের লক্ষ্যে সংসদ সদস্যরা সব ধরনের শুল্ক কর পরিশোধ ব্যতিরেকে গাড়ি আমদানির প্রাধিকার কিছুটা পরিবর্তন করে একটি মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এই উদ্দেশ্যে সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক কর অব্যাহতির সুবিধা সংক্রান্ত বিধানটি পরিবর্তন করা যেতে পারে। এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়কে এ সংক্রান্ত বিধান দ্য মেম্বারস অব পার্লামেন্ট (রেমুনেরেশন অ্যান্ড অ্যালাউন্সেস) অর্ডার, ১৯৭৩ এ প্রয়োজনীয় সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
১৯৮৮ সালের ২৪ মে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে তৎকালীন সরকার সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব ধরনের শুল্ক ও কর প্রদানে অব্যাহতি সুবিধা দিয়েছিল।
এ সুবিধায় ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত গত ১৫ বছরে সংসদ সদস্যরা মোট ৫৭২টি গাড়ি আমদানি করেছেন। এসব গাড়ির মূল্য ছিল প্রায় ৩৯৭ কোটি টাকা। শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা নিয়ে ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা শুল্ক মওকুফ পেয়েছেন তারা। শেষ পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করা গেলে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক-কর দিতে হবে।
জানা গেছে, বেশিরভাগ সংসদ সদস্যই জাপান থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি আমদানি করেছেন। এসব গাড়ির মধ্যে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার, রেঞ্জ রোভার, মিতসুবিসি পাজেরো অন্যতম।
সাধারণ নাগরিকদের এসব গাড়ি আমদানি করতে ১০০ থেকে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক দিতে হয়। এর বাইরে গাড়ির ইঞ্জিন-ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে দিতে হয় নানাবিধ সম্পূরক শুল্ক এবং ভ্যাট।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।