ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে আসে পাহাড়ি ঢলে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ভরপুর সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো। সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় পাহাড়ি নদী দিয়ে নেমে আসে ঢল।
নিমিষেই ভাসিয়ে নেয় সবকিছু। সেই কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সিলেটের সব ক’টি পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এখন বন্যার পানি কিছুটা কমে এসেছে। প্লাবিত নিম্নাঞ্চল ভেসে উঠেছে। রাস্তা-ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও যানবাহন চলাচল করছে। ফলে অনির্দিষ্টকাল বন্ধ থাকা সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে প্রশাসন।
১৮ জুন থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছানাকান্দি, জলাবন রাতারগুল, পান্থুমাই এবং কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথর, উৎমা ছড়াসহ জনপ্রিয় পযর্টনকেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
রোববার (২৩ জুন) পর্যটক নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা এবং আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকা সাপেক্ষে উপজেলা পর্যটন কমিটি জাফলং ট্যুরিস্ট স্পট চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ২১, ২২ জুন দুইদফা জাফলং পর্যটনকেন্দ্র সরেজমিনে পরিদর্শন করেন গোয়াইনঘাটের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের একটি একটি টিম।
এছাড়া গোয়াইনঘাট থানা, ট্যুরিস্ট পুলিশ টিম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামও পর্যটনকেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সব বোট মালিক, নৌ চালক ও যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনাহ সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না। ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।
জাফলং নদীর পানির পরিমাণ ও স্রোত বিবেচনায় গত দুইদিন (২১ ও ২২ জুন) পর্যটনকেন্দ্র চালু করার জন্য ব্যবসায়ী, নৌকা চালক-মালিক, ট্যুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।
পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটক, ট্যুর অপারেটর ও নৌকার মাঝি সবাইকে উপর্যুক্ত নির্দেশনা প্রতি পালন নিশ্চিত করার শর্তে ২৩ জুন (রোববার) দুপুর থেকে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পট, রাতারগুল স্পট চালু করা হয়।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার সব ক’টি পর্যটনকেন্দ্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রশাসনের একটি প্রতিনিধিদল কয়েক দফা পরিদর্শন করেন। জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নৌ-চলাচলের রুটে যাত্রীদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় সব বোট মালিক, নৌ চালক-মাঝি ও যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
জাফলংয়ে পিয়াইন নদীর পানির গভীরতা ও স্রোত বিবেচনাহ সাঁতার জানে না এবং ১২ বছরের কম বয়সীদের নিয়ে জাফলং ট্যুরিস্ট স্পটে নৌকায় চলাচল করা যাবে না, মর্মে সিদ্ধান্ত হয়। ট্যুরিস্ট পুলিশকে পর্যটনকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিধানের জন্য বলা হয়েছে।
উল্লিখিত শর্তসাপেক্ষ সব ক’টি পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ১৮ জুন সীমান্তবর্তী উপজেলা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট বন্যায় প্লাবিত হয়। রাস্তা-ঘাট ডুবে চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ দুই উপজেলার সবকটি পর্যটনকেন্দ্র অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে দুই উপজেলা প্রশাসন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।