জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (কাস্টমস ও ভ্যাট) ড. মো. মতিউর রহমানকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার পর যোগদান করলেও তার কোনো হদিস মিলছে না। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে তার জন্য আলাদা কোনো কক্ষ নেই।
এমনকি তার বসার জন্য কোনো চেয়ার-টেবিলও নেই। তিনি মন্ত্রণালয়েও আসেননি। তবে অন্য ব্যক্তির মাধ্যমে তিনি যোগদানপত্র পাঠিয়েছেন বলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
সোমবার (২৪ জুন) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে মতিউর রহমানকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে । তবে মতিউর রহমান পদোন্নতি পেয়ে এনবিআর’র সদস্য (কাস্টমস ও ভ্যাট) হয়েছেন। তিনি এখনো ওই পদেই আছেন। তবে তাকে যেহেতু অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে, তিনি এনবিআরের কোনো কার্যক্রম করতে পারবেন না। তার কর্মক্ষেত্র হবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে মতিউর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার অর্থ হলো তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। সংস্থাপন বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য ওএসডি করার বিধান আছে। এর বাইরে অন্য বিভাগ, সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের জন্য ওএসডির বদলে সংযুক্ত করার পদ্ধতি চালু আছে। মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটিই হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মতিউর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার পর এরই মধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন। কিন্তু যোগদান করতে তিনি নিজে আসেননি। মন্ত্রণালয়ে যোগ দিলেও তার জন্য আলাদা কোনো কক্ষ বা চেয়ার-টেবিল নেই।
এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা গুঞ্জন শুনছি মতিউর রহমান দেশে নেই। তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। এ কারণেই হয়তো তিনি অন্যের মাধ্যমে যোগদানপত্র পাঠিয়েছেন। অন্যের মাধ্যমে পত্র পাঠিয়ে যোগদান করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
এদিকে ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর মতিউর রহমানকে সর্বশেষ ঈদের দ্বিতীয় দিন (১৮ জুন) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইন্টারভিউতে দেখা যায়। এরপর ধানমন্ডিসহ মতিউরের বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি তার। এমনকি কোরবানির ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি আর এনবিআর কার্যালয়ে আসেননি।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করতে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করে। একইদিন কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া তিনি হারিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদও।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।