রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে এক নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে খিলক্ষেত থানা–পুলিশ। ওই নারীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই নারী শনিবার খিলক্ষেত থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে ওই নারী তার স্বামীকে নিয়ে খিলক্ষেতের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ফিরছিলেন। পথে ৬ থেকে ৭ ব্যক্তি তাদেরকে বনরূপা এলাকায় নিয়ে স্বামীকে আটকে রাখে ও নববধূকে ধর্ষণ করে। কৌশলে সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান ওই নারীর স্বামী। শনিবার এ ঘটনায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি কাশেমসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ জানায়, ওই নারীকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে বনরূপা এলাকার ঝোপঝাড়ের মধ্যে নিয়ে মারধর করে এবং ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এক পর্যায়ে তারা ভিকটিমের স্বামীকে ছেড়ে দেয় মুক্তিপণের টাকা আনার জন্য। ভিকটিমের স্বামী ওই স্থান ত্যাগ করে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহায়তা চান।
এরমধ্যে আসামিরা ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে মারধর করে ও শারীরিক নির্যাতন করে। ভিকটিম তাদেরকে কাঁদতে কাঁদতে না মারার জন্য বারবার অনুরোধ করেন। আসামিরা ভিকটিমের আর্তনাদে কর্ণপাত না করে তার উপর অমানুষিক অত্যাচার চালিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে আসামিরা ভিকটিমকে ধর্ষণ করে।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। এসি ক্যান্টনমেন্ট জোন শেখ মুত্তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে খিলক্ষেত থানার কয়েকটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করে।
শেখ মুত্তাজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী নারী শুক্রবার সন্ধ্যায় তার স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে বের হন। তারা খিলক্ষেত থানা এলাকার ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের বনরূপা এলাকায় গেলে সেখানে আবুল কাশেম ওরফে সুমন নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে সাতজনের দল তাদের অপহরণ করে। ভুক্তভোগী নারী ও তার স্বামীকে বনরূপা এলাকার ঝোপঝাড়ের ভেতরে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্বামীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করে তারা। মুক্তিপণের টাকা আনার জন্য স্বামীকে ছেড়ে দিলে তিনি বেরিয়ে এসে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন।
এসি শেখ মুত্তাজুল ইসলাম আরও বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বনরূপা এলাকায় যায়। পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা ঝোপঝাড়ের ভেতরে বারবার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। ভোর চারটার দিকে পুলিশ সেখান থেকে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পারে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
পুলিশের গুলশান বিভাগের ডিসি রিফাত রহমান শামীম বলেন, শুক্রবার রাতে ঘটনাটি জানানোর পরপরই অভিযান শুরু হয়। গ্রেপ্তাররা দলবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জড়িত একজন ওই নারীর পূর্ব পরিচিত।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কাশেম জানায়, ওই নারীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল; তাকে বিয়ে না করায় পরিকল্পিতভাবে দলবল নিয়ে ওই নারীকে তুলে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।