ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল সংসদে পাস হয়েছে। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম সোমবার বিলটি পাসের জন্য জাতীয় সংসদে তোলেন। বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠনোা ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে ‘প্রশাসক’ হিসেবে নিয়োগ করবে এবং নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসক নিয়োগ হবে কেবল এক মেয়াদে ১২০ দিনের জন্য। কোনও দৈবদুর্বিপাক, অতিমারি, মহামারি ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার ওই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।
বিলে আরো বলা হয়েছে, কোনো চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো সদস্য বা প্রশাসক যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।
বিদ্যমান আইনে এটি ১০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ‘সচিব’ পদটির নাম হবে ‘ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা’।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য পংকজ নাথ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং চৌকিদার দফাদারদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, সম্মানীটা সম্মানজনক হওয়া উচিত। এখন সরকারি টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নিজের আয় থেকে মিলিয়ে চেয়ারম্যানের ভাতা ১০ হাজার টাকা আর সদস্যদের ভাতা পাঁচ হাজার টাকা। বর্তমান বাস্তবতায় এটি দ্বিগুণ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান আগে আইনে ছিলো না। এটার সুবিধা যেমন আছে, সরকারের স্বেচ্ছাচারের আশঙ্কাও আছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তারা প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করেন। তাদের সম্মানী খুবই অসম্মানজনক। এটা সম্মানজনক হওয়া উচিত।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এস এম ব্রাহানী সুলতান বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি সাংঘর্ষিক।
বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়। তারা এ টাকা কীভাবে তুলবে? তখন দুর্নীতি করে। টিআর কাবিখা বিক্রি করে দেয়। এ জন্য দুর্নীতি কমাতে তাদের ভাতা বাড়ানো উচিত।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক নিয়োগ সাংঘর্ষিক নয়। এটা সাময়িক। নতুন ইউপি গঠনের পর এটা করতে হয়, এখানে আইনের সঙ্গে কোনো সাংঘর্ষিক নয়। আইনি জটিলতা সৃষ্টি করেও পদে থেকে যাওয়ার উদাহরণ আছে। এই বিধান এ ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।