শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো দেশের সম্পদ বেঁচে ক্ষমতায় আসে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রিতে বাধ সাধায় ২০০১ সালে সরকার গঠন করতে পারিনি। ওই সময় অনেক ভোট পেয়েছিলাম, কিন্তু প্রয়োজনীয় সিট পাইনি। বাংলাদেশের সম্পদ না বেচায় যদি ক্ষমতায় না আসি, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না।
শুক্রবার (৫জুলাই) বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষ্যে আয়োজিত সুধী সমাবেশের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমার একটা দোষের কারণে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমি গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিইনি। আমার সময় আন্তর্জাতিক টেন্ডার দিয়ে গ্যাস বিভিন্ন আমেরিকান কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছিল, তখন তারা উত্তোলন করছিল। সেই গ্যাস উত্তোলন করে তারা বিক্রি করবে ভারতের কাছে, আমি সেখানে বাধ সাধলাম। এই গ্যাস আমার দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করবে। আমার ৫০ বছরের উদ্বৃত্ত থাকবে। তারপর আমি গ্যাস বিক্রি করব।
সরকারপ্রধান বলেন, বড় বড় দেশের এ ধরনের দাবি না মানলে যেটা হয়, আমার ভাগ্যেও তাই হলো। আমি ২০০১ এর সরকার গঠন করতে পারলাম না। ভোট আমরা পেয়েছিলাম বেশি, সিট পেলাম না, তাই সরকার গঠন করতে পারলাম না। তাতে আমার কোন আফসোস ছিল না। এই বাংলাদেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে হবে, শেখ মুজিবের মেয়ে কখনো সেটা চায় না। আমার বাবা কারো কাছে মাথা নত করেননি, আমিও করি না। ক্ষমতা না আসলে কী আসে যায়। কিন্তু দেশের সম্পদ বিক্রি করে কখনোই না। খালেদা জিয়া রাজি হলেন, ক্ষমতায় আসলেন। আমি শুধু এইটুকু বলেছিলাম যে, আল্লাহতালা জন বুঝে ধন দেয়। কিছু কিছু মানুষ আত্মান্বেষী থাকে, এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরকে হত্যার পর রক্তাক্তভাবে চলতে থাকল বাংলাদেশ। যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করল সেই জাতি কেন মাথা নিচু করে চলবে? অকুতোভয় জাতিকে একেবারে মর্যাদাহীন করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের উপর খবরদারি বেশি চলত। ২১ বছরের পর সরকারে আসি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন।
প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতু থিমসং প্রচার করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।