ভিডিও

রাষ্ট্রপতি বরাবর শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি পেশ

সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম

জিরো পয়েন্টে অবরোধ : তীব্র যানজট

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৯:৪৮ রাত
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২৪, ১২:১১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

কোটা আন্দোলনের দাবি মেনে নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারীরা।

বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তারা বলেন, আমরা বলেছি কোটা বাতিল করে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমরা পদযাত্রা সফল করেছি।

আমরা সরকার থেকে এখনও আশ্বাস পাচ্ছি না। কোটা সংস্কারের এখতিয়ার সরকারের। কিন্তু সরকার এড়িয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছি, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সব প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু অনগ্রসরদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে সংবিধান অনুসারে সংসদে আইন প্রণয়ন করতে হবে। আমরা আশা করি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়ন করতে জরুরি পদক্ষেপ নেবেন।

আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এক দফা দাবিতে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছি। আমরা এই দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই। আজকে আমাদের থামানো যায়নি। আমরা চাচ্ছি না কঠোর কর্মসূচিতে যেতে। আমরা চাই দ্রুত দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হোক। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো।

তিনি আরও বলেন, ২৪ ঘণ্টা বাড়ানো হলো মামলা তুলে নিতে। না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচি নিয়ে সবাইকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবো।

জিরো পয়েন্টে অবরোধ : তীব্র যানজট : রাজধানীর জিরো পয়েন্টে কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের অবরোধে গুলিস্তানসহ আশপাশের সড়কগুলোতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গণপরিবহনে চলাচলকালী যাত্রীরা। দীর্ঘসময় যান চলাচল না করায় হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয় তাদের।

রোববার বিকেল ৩টার দিকে ওই এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।

ষাটোর্ধ্ব আব্দুল আলিম নারায়ণগঞ্জে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের সামনে আসেন। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে কাটেন বাসের টিকিট। বাসেও ওঠেন তিনি। কিন্তু সড়ক বন্ধ থাকায় বাসেই এক ঘণ্টা বসে থাকেন তিনি।

আব্দুল আলিমের মতো শত শত এমন যাত্রী বাসে উঠেও যেতে পারেন না। অনেককেই বাস, সিএনজি কিংবা রিকশা থেকে নেমে হেঁটে স্বল্প দূরত্বে রওনা হতে দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর মৎস্য ভবন, পল্টন, গুলিস্তান, সদরঘাট রোড, মতিঝিলসহ আশপাশের এলাকা অবরোধের কারণে স্থবির হয়ে পড়ে। বাস, সিএনজি, প্রাইভেটকার থেকে নেমে যাত্রীদের হেঁটেই গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।

ডেমরা যাওয়ার জন্য শাহেদ সেলিম নামের একজন গুলিস্তানে আসেন। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় তাকে ফিরে যেতে দেখা যায়।

এ সময় কথা হয় শাহেদ সেলিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এভাবে রাস্তা বন্ধ করে আমাদের যেতে না দেওয়ার কোনো মানে হয় না।

এদিকে দুপুর আড়াইটার পর রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের গণপদযাত্রা জিরো পয়েন্টে আটকে দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধায় সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তবে ব্যারিকেড ভেঙে বঙ্গভবনের দিকে চলে যান শিক্ষার্থীদের একাংশ। এরপর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।

সেখান থেকে ২টা ৪২ মিনিটে একদফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিতে বঙ্গবভনে যান ১২ জনের একটি প্রতিনিধিদল। রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিয়ে ২টা ৫২ মিনিটের দিকে বের হন তারা।

শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলে ছিলেন- নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, সার্জিস আলম, আরিফ হোসেন, হাসিব আল ইসলাম, উমামা ফাতেমা, রিফাত রশিদ, সুমাইয়া, আব্দুল হান্নান মাসুদ, মো. মাহিন সরকার, আব্দুল কাদের ও মেহেরান নিসা।

‘সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরে সংঘাত নিরসনে কাজ করেছে পুলিশ’ : ডিএমপির যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনে কোনো ধরনের সংঘাত যেন না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে পুলিশ। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানের নির্দেশে পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরে কাজ করছে।’

রোববার গুলিস্তানে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘ডিএমপির সব ইউনিটের সব পুলিশ সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ কিংবা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ চেষ্টা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যতটুকু ধৈর্য ধরা প্রয়োজন ততটুকু ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়েছে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এ যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘শুরুতেই আমরা যদি কাউকে মারপিট করি সেটা সমাধান নয়। শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছি। পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরে, কোনো ধরনের সংঘাত যেন না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।’ জনদুর্ভোগের বিষয়ে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সব সদস্যের এজন্য অত্যন্ত কষ্ট হচ্ছে। যানজট কীভাবে নিরসন করা যায় এবং জনগণকে কীভাবে স্বস্তি দেওয়া যায় সে ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে।’



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS