ঢাকার আশুলিয়া থানার সামনের সড়কে ভ্যানে লাশের স্তূপ করে রাখার ভিডিওতে যে পুলিশ কর্মকর্তাকে দেখা যায়, তার পরিচয় মিলেছে। ওই পুলিশ সদস্যের নাম আরাফাত হোসেন। ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের এই পরিদর্শকের (তদন্ত) বাড়ি বরিশালে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে সাবেক শিক্ষার্থী তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আরাফাতের বাবা মো. আরিফ হোসেন বদরটুনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও হরিনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। এদিকে ভ্যানে লাশের স্তূপের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন আরাফাত। তিনি কোথায় আছেন, কেউ বলতে পারছে না। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। আরাফাতের সঙ্গে থাকা পুলিশের অন্য সদস্যদের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
গত ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয় ভিডিওটি। আশুলিয়া থানার সামনের ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। এর আগেই ভ্যানে লাশের স্তূপ করে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার পাশে। মহাসড়ক থেকে থানার দিকে অগ্রসর হয়ে এসবি অফিসের দিকে চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভেতরে ভিডিওতে থাকা বালুভর্তি বস্তাগুলো এসবি অফিসের দিকে যেতে থাকা ভবনের সামনে স্তূপ করা ছিল। কিন্তু থানা পরিষ্কারের সময় সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ড্রোন উড়িয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অবস্থান শনাক্ত করা হয়। তবে সেটি পুলিশের ড্রোন কি না, তা জানি না। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশ ভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।