রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে গত ইরি-বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ ধান চাল সংগ্রহ অভিযান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত করতে ব্যর্থ হয়ে উপজেলা খাদ্য বিভাগ। তবে চালের ক্ষেত্রে কিছুটা অর্জনে কাছাকাছি পৌঁছালেও ধান সংগ্রহ ব্যর্থ হয়েছে।
তারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দরের চাইতে স্থানীয় বাজারে ধানের দাম চাষিরা সহজে বেশি পাওয়ায় সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে তারা ধান দিতে খুব বেশি আগ্রহী নয়। ধান সংগ্রহ অভিযানের সময় বৃষ্টি বাদল লেগে থাকার কারণে বেশি দামের আশায় না থেকে কাটা মাড়াই সময়ে আশানূরুপ দাম পেয়ে চাষিরা ধান বিক্রি করে দেয়। ফলে ক্রয় কেন্দ্রে ধান দেওয়ার জন্য আগ্রহ না থাকায় গত কয়েকবছর ধরে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য বিভাগ।
জানা যায়, গত ইরি-বোরো মৌসুমে রাণীনগর উপজেলায় ৪৫ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৩৭৬ টন সিদ্ধ চাল এবং ৪৪ টাকা কেজি দরে ৪৮ টন আতব চাল সংগ্রহ ৩২টাকা কেজি দরে ১ হাজার ৮৬৮টন ধান ক্রয়ের বরাদ্দ পায় রাণীনগর খাদ্য বিভাগ। গত মে মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন তারা।
খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহের জন্য উপজেলা খাদ্য বিভাগের সাথে ৩৪ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ করেন। এসব ধান-চাল সরবরাহে সরকারিভাবে নির্ধারিত সময়সীমা বেধে দেয়া হয় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ২ হাজার ৩৭৬ টন চালের মধ্যে মিলাররা সরবরাহ করেন ১ হাজার ৯৩৭ টন। এতে ৪৩৯ টন চাল সংগ্রহ ঘাটতি থাকে।
এছাড়া বরাদ্দকৃত ৪৮টন আতব চালের মধ্যে ১ টন চালও সরবরাহ করেননি মিলাররা। অপরদিকে ধান সংগ্রহে সরাসরি কৃষকদের কাছে থেকে ১ হাজার ৮৬৮টন ধানের মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫৫১.৩৬০টন। ফলে ধান সংগ্রহ অভিযান চরমভাবে ব্যাহত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দরের চাইতে স্থানীয় বাজারে বেশি দর পাওয়ায় কৃষকরা ধান ক্রয় কেন্দ্রে দেয় না।
উপজেলার গোনা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম, মিরাটের কৃষক আব্দুল জব্বারসহ বেশ কয়েক জন কৃষক জানান, সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিতে গেলে ব্যাংক একাউন্ট, অনলাইনে আবেদন, ধানের মান নির্ণয়সহ বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয়।
এছাড়া সরকার ধান ক্রয়ে যে দর নির্ধারণ করে দেয় এর চাইতে স্থানীয় বাজারে প্রতিমণ ধান ২৫০ থেকে ৩শ’ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে পারছি এবং কোন ঝামেলা ছাড়াই সাথে সাথেই ধান বিক্রির টাকা হাতে পাই। তাই খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে যায় না চাষিরা।
রাণীনগর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ওবাইদুর রহমান জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কিনা তা মতামত চেয়ে উর্ধ্বতন মহল থেকে পত্র দেয়া হয়েছে। সেখানে ধান সংগ্রহ হওয়ার সম্ভবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছি।
এছাড়া সংগ্রহ অভিযানের নির্ধারিত সময় বাড়ানো হবে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। তবে সময় বাড়ানো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।