ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : গত ৫ আগস্ট সদর উপজেলার ছিট চিলারং এলাকায় দুর্বৃত্তদের আগুনে নিহত মো. আবু রায়হানসহ ৪ জন মৃত্যুর ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়। উক্ত ঘটনায় নিহত মো. আবু রায়হানের বাবা মো. ফজলে আলম ওরফে রাসেদ (৫৩) বাদি হয়ে গতকাল সোমবার ঠাকুরগাঁও বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০-২শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক নিত্যানন্দ সরকার মামলাটি ঠাকুরগাঁও সদর থানাকে এজাহারভুক্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মো. আবু রায়হানসহ নিহত ৪ জন বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের আন্দোলন থেকে দূরে সরে যেতে আসামিরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করে। তাতেও কাজ না হলে আর্থিক প্রস্তাবনা দিলেও তা প্রত্যাখান করা হয়। পরবর্তীতে আসামিরা কৌশলে ছাত্র আন্দোলনের আলাপ আলোচনার কথা বলে নিহত ৪ জনকে মামলার ৯নং আসামি পৌরসভার কাউন্সিলর একরামোদ্দৌলা সাহেবের বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে মো. আবু রায়হান, মো. রাকিবুল হাসান (রকি), মো. আল মামুন (মামুন) ও শাওন পারভেজকে ঘরের ভেতরে কথা বলার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে আগে থেকেই মামলার ১-১৪ নং এবং ১৫-৯১ নং আসামিরা উপস্থিত ছিল বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। পরক্ষণে কৌশলে উক্ত ৪ জনকে ঘরের ভেতর আটকে রেখে আসামিরা বাইরে বের হয়ে পরেন।
ঘরের ভেতর পূর্ব থেকেই গ্যাস সিলিন্ডারের মুখ খুলে রেখে বাইরে থেকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুনে দগ্ধদের চিৎকারে আশপাশের মানুষজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবু রায়হানকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ আগস্ট তার মৃত্যু হয়। আল মামুন (মামুন) ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যায়। এছাড়াও এ ঘটনায় আরও ২ জনেরও মৃত্যু হয়।
মামলার আসামিরা হলেন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ আপেল, সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. অরুনাংশু দত্ত টিটো, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজনসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০-২শ’ জন অজ্ঞাতনামা আসামি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।