ভিডিও

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর-সরিষাবাড়ি স্থল যোগাযোগ পাল্টে দেবে লাখো মানুষের জীবনযাত্রা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৯:৩৮ রাত
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৯:৩৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আবদুল জলিল, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) : যমুনা নদী দ্বারা বিভক্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার সাথে পূর্বের জামালপুর সরিষাবাড়ি উপজেলার স্থল যোগাযোগ স্থাপনের দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। এই দাবি বাস্তবায়িত হলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের যাতায়াতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে।

এই সম্ভাবনার পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে দেশের ৩২তম নদীবন্দর হিসেবে মেঘাই-নাটুয়ারপাড়া রুটকে স্বীকৃতি দিয়ে কাজ শুরুর মাধ্যমে। ইতোমধ্যে নদীবন্দরের কাজ এগিয়েছে অনেকখানি। নদীর দুই পাড়ে বিআইডব্লিউটিএ এর দুটো পল্টুন দিয়ে বন্দরের কাজ শুরু হয়েছে। বন্দরের জন্যে প্রয়োজনীয় অফিস ও অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে যমুনা নদীর মেঘাই ঘাট এলাকায়।

কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া থেকে মেঘাইঘাট পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার যমুনা নদীর দুর্গম পথ ও চর পাড়ি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধলাখ মানুষ যাতায়াত করে। উত্তাল যমুনার তরঙ্গ কেটে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত থেকে মুক্তি পেতে এই তল্লাটের মানুষ বহুবছর যাবৎ সড়ক পথে যোগাযোগের দাবি জানিয়ে আসছে। বেশ কয়েকবছর যাবৎ যমুনার বুকে বড় বড় চর জেগে আবাদি জমি তৈরি হওয়ায় চরবাসীর স্থলযোগাযোগের স্বপ্ন পূরণের পথ তৈরি হয়েছে। জেগে ওঠা চরের আয়তন ও উচ্চতা বাড়ছে প্রতিবছর।

যমুনার মূল স্র্রোতধারাও এখন অনেক সঙ্কুচিত হয়ে এসেছে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার প্রশ্বস্ত এই নদীতে শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে মাত্র তিন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকায়। রাজধানী ঢাকা থেকে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা হয়ে কাজিপুরের মনসুরনগর ইউনিয়ন পর্যন্ত পাকা সড়ক রয়েছে। এখন মনসুরনগর থেকে চরগিরিশ ইউনিয়ন হয়ে যমুনার ছোট একটি শাখা পাড়ি দিলেই নাটুয়ারপাড়ার সাথে স্থলপথে যোগাযোগ করা সম্ভব।

আর নাটুয়ারপাড়া থেকে নদীবন্দরের সুবিধায় নাটুয়ারপাড়ার সাথে মেঘাই ঘাটের যোগাযোগ সম্ভব হবে। আর মেঘাই থেকে বগুড়ার ধুনট-শেরপুর উপজেলা হয়ে জাতীয় মহামসড়কের সাথে যোগাযোগ তৈরি হবে। কাজিপুরের চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়া ঘাটে একটি ৫০০ মিটার সেতু স্থাপন করলেই বিশাল এই যোগাযোগের দ্বার উন্মুক্ত হবে। ইতোমধ্যে এই ঘাট এলাকা দিয়ে জামালপুর থেকে চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে। চরে চলাচলের জন্যে নির্মিত হয়েছে পাকা রাস্তা।

ইঞ্জিনিয়ারিং ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির প্রধান কাজিপুরের ফুলজোড় চরের বাসিন্দা প্রকৌশলী ফরিদুল ইসলাম জানান, নাটুয়ারপাড়ার সাথে জামালপুরের সরিষাবাড়ি পর্যন্ত সড়কপথে একটি ব্রিজের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপিত হলে আমরা নিজের এলাকায় শিল্প কারখানা স্থাপন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

শিল্পপতি সাখাওয়াৎ হোসেন জানান, কাজিপুরের চরাঞ্চলে কারখানা স্থাপনে জমির অভাব হবে না। তাছাড়া প্রয়োজনীয় শ্রম পাওয়া যাবে সস্তায়। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে কারখানা স্থাপন করার ইচ্ছে আছে।

নাটুয়ারপাড়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ, শিক্ষাবিদ ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বকুল সরকার জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার সাথে নাটুয়ারপাড়া পর্যন্ত সড়ক পথে যোগাযোগের দাবি এখন সময়োপযোগী।

এটি বাস্তবায়িত হলে অবহেলিত কয়েক লক্ষ মানুষের ভাগ্যয়োন্নয়নের পাশাপাশি শিল্পকারখানা স্থাপনে এলাকার চেহারাই পাল্টে যাবে। এখানে কৃষি নির্ভর অনেক শিল্পকারখানা স্থাপনের সুযোগ রয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS