রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে নিষিদ্ধ রিং (চায়না) ম্যাজিক জাল দিয়ে অবাধে দেশীয় পোনা মাছ নিধন করছেন এক শ্রেণির অসাধু মৎস্যজীবীরা। দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা পড়ছে এই জালে। ফলে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীসহ খাল-বিল ও জলাশয়ের। কমতে শুরু করেছে মাছের প্রজনন।
জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জলাশয়ে রিং (চায়না) ম্যাজিক জাল দিয়ে অবাধে দেশি মাছ শিকার করছে কিছু অসাধু মৎস্যজীবী। মৎস্য অফিসের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে অভিযান চালালেও তারা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
জালগুলো সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উঁচু এবং ও ৪০ থেকে ৭০ ফুট লম্বা আকৃতির ক্ষুদ্রফাঁস যা মশারির মতো আকৃতির হয়। লোহার রডের রিং দিয়ে খোপ আকারে বাক্স তৈরি করে চারপাশ অতিসুক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘেরাও করে তৈরি হয় এই জাল। একটি রিং জালের দাম আকার ও মানভেদে ৩ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
এই জাল দিয়ে মিঠা পানির দেশি মাছ শোল, টাকি, কই, পুঁটি, শিং, ট্যাংরা, বাইন, এমনকি কুঁচো, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক অবাধে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাঙ, সাপ, কচ্ছপ, বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণীগুলোও মারা পড়ছে। ফলে হুমকিতে পড়েছে এসব জলজ প্রাণীর জীবনচক্র।
উপজেলার রক্তদহ, বিল মুনছুর, বিল চৌর, আতাইকুলা ২নং স্লুইসগেট, ভবাণীপুর পীরেরা, লক্ষ্মীপুর, চকেরপুল, হাতিরপুল, বিলপালশাসহ বিভিন্ন মাঠে রিং জাল দিয়ে মাছ মারা হচ্ছে। রাণীনগরে প্রায় ১ হাজার ৬৫০টি মৎস্যজীবী পরিবার আছে। জীবিকার তাগিদে তারাও সুযোগ পেলেই রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে।
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য অফিসার পলাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, চায়না রিং জাল এ এলাকায় প্রকাশ্যে তেমন বেচাকেনা হয় না। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা কৌশলে এসব নিয়ে আসে। তাই উৎপত্তিস্থলে বন্ধ করা না গেলে এর প্রভাব তেমন পরবেনা। রিং জাল দিয়ে মাছ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
জেলে ও স্থানীয়রা যাতে এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে দেশি প্রজাতির পোনা মাছ শিকার না করে সে জন্য মৎস্য বিভাগ বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছে। পাশাপাশি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অবৈধ মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান আছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।