স্টাফ রিপোর্টার : দেবী আসার ঘণ্টা বেজে যায় মহালয়ার দিন থেকেই। ষষ্ঠী থেকেই দুর্গাপূজার উৎসব শুরু হয়। তবে উৎসবের আনন্দটা পুরোদমে শুরু হয় সপ্তমী থেকে।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে (ষোল উপাদানে) দেবীকে পূজা দেয়া হয়। সকালে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদান করা হয়। একইসঙ্গে দেবীকে আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে পূজা করেন ভক্তরা। এ সময় তারা মায়ের সামনে বসে মায়ের মুখ দর্শন করেন এবং অঞ্জলি প্রদান করেন ভক্তিভরে।
বগুড়াসহ দেশের সব মন্দিরেই সকাল থেকে শুরু হয় সপ্তমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা। চণ্ডী ও মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে পূজা অর্চনা করা হয়। ঢাক, কাঁসর, শঙ্খ, এবং উলুধ্বনিতে মুখরিত প্রতিটি মন্দির। এছাড়াও দিনব্যাপি চণ্ডী ও মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে পূজা, দেবী-দর্শন, দেবীর পায়ে ভক্তদের অঞ্জলি দেওয়া, প্রসাদ গ্রহণের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা চলে দিনভর। সকালে পূজার জন্য মন্ডপগুলোতে ভিড় থাকলেও বিকেলে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলেছে প্রতিমা দর্শণ।
পাঁচদিনব্যাপি অনুষ্ঠানের মহাসপ্তমীতে মন্ডপগুলোতে দেখা যায়, ভক্তরা পুরোহিতের সঙ্গে মন্ত্রে সুর মিলিয়ে করছেন দুর্গা মায়ের বন্দনা। কেউ কেউ এসেছেন শুধু দেবী দর্শণে। মন্ডপগুলোতে পূজা শেষে দীর্ঘ লাইনে প্রসাদ নিতে দেখা গেছে ভক্তদের।
এমনই একজন বগুড়ার দত্তবাড়ী এলাকার বাসিন্দা সুমনা রায় ছেলে-মেয়ে ও বেশ কয়েকজন আত্মীয়স্বজনকে নিয়ে এসেছিলেন দত্তবাড়ি পূজা মণ্ডপে। মায়ের কাছে সুখ-শান্তি সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা শেষে তিনি জানান, ভক্তদের দুঃখ-কষ্ট এবং সমাজের নানা অনাচার দূর করতে মা প্রতি বছর আসেন। আমাদের মধ্যে অনাবিল সুখ-সমৃদ্ধি বিলিয়ে দিয়ে আবারও বিদায় নেন। প্রার্থনা করলাম পরিবর্তীত পরিস্থিতিতে যেন সবাই পরিবারসহ নিরাপদে থাকি এবং দেশে শান্তি বজায় থাকে।
এ বছর ভক্তদের কষ্ট দূর করতে দেবী দুর্গা এসেছেন দোলায় চড়ে, আর দশমীর দিন বিদায় নিবেন এই ঘোড়ায় চড়ে।
আগামিকাল শুক্রবার ১১ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ১২ অক্টোবর মহানবমী। তবে পঞ্জিকা মতে, ১২ অক্টোবর মহানবমী পূজার পরই দশমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমী উদযাপন করা হবে। সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, মহালয়ার দিন ‘কন্যারূপে’ ধরায় আসেন দশভূজা দেবী দুর্গা। বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তাকে এক বছরের জন্য বিদায় জানানো হয়। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মাঝে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব।
পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, দেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে এবার দুর্গা পূজা হচ্ছে। এরমধ্যে জেলার ১২টি উপজেলায় ৬২৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।