ভিডিও

১২ বছরেও সংস্কার হয়নি ১ কি:মি: রাস্তা

শাজাহানপুরে পুকুরে ধ্বসে যাচ্ছে জালশুকা-শুড়িমারা রাস্তা: অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা: পঙ্গু হয়েছেন এক কৃষক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪, ০৭:১৩ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪, ০৯:১১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

মাত্র ১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের অভাবে গ্রামীণ জনপদে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। অহরহ ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। পরিস্থিতির শিকার এক কৃষক কোমর ভেঙ্গে পঙ্গু হয়েছেন। গভীর পুকুরে ধ্বসে যাচ্ছে বসতবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা। বর্ষায় বিভিন্ন বয়সী শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি ও পথচারিদের দুর্দশা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম বঞ্চনার এমন চিত্র ফুটে উঠেছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের জালশুকা উত্তরপাড়া গ্রামে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জালশুকা টু লক্ষèীকোলা রাস্তাটি সুদুর অতীত থেকে যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে জালশুকা বাজার, জালশুকা উত্তরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়, মালিপাড়া বাজার, পেড়ীর হাট, মহিষাবান হাটসহ গাবতলী উপজেলার সাথে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। এছাড়া খোট্টাপাড়া, জালশুকা উত্তরপাড়া, ছোট চান্দাই, শুড়িমারা, লক্ষèীকোলা ও শেরকোল গ্রামের প্রায় ২ হাজার পরিবারের মানুষ এ পথে চলাচল করেন এবং জমির ফসল বাড়িতে তোলেন ও হাটবাজারে নেন। মাত্র ১ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন ও সংস্কারের অভাবে পেড়ী, মহিষাবান ও গাবতলীতে যেতে কয়েক গ্রামের মানুষকে ৫-৭ কিলোমিটার পথ বেশি  ঘুরতে হয়।

জালশুকা উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হামিদুর রাজ্জাক মন্ডল (৬৮) জানিয়েছেন, জালশুকা বাজার থেকে শুড়িমারা তিনমাথা পর্যন্ত রাস্তার দূরত্ব ১ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৮ বছর আগে জালশুকা বাজার থেকে জালশুকা উত্তরপাড়া ছাইফুল হাজীর বাড়ি পর্যন্ত আধা কিলোমিটার অংশ কার্পেটিং করা হয়। ৫-৬ বছরের মাথায় কার্পেটিং নষ্ট হয়ে যায়। এরপর প্রায় ১২ বছর যাবত স্থানীয়রা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বাকি আধা কিলোমিটারের মধ্যে ২শ’ মিটার অংশে ইট বিছিয়ে দেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল ফারুক। প্রায় ৫ বছর আগে বিছানো ইট অনেক জায়গায় দেবে গেছে। আবার গভীর পুকুরে ধ্বসে গেছে। ফলে ওই ধ্বসে যাওয়া অংশে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে রিক্সা ভ্যান না চলায় মাঠ থেকে ফসল ঘরে তুলতে কৃষককে গুণতে হচ্ছে ৫ গুণ টাকা। যে ফসল পরিবহণে ২শ’ টাকা খরচ হতো এখন তা ১ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই এলাকার টাইলস্ মিস্ত্রি আকতার হোসেন জানান, প্রায় ১ বছর আগে জালশুকা বাজারে যাওয়ার পথে ধ্বসে যাওয়া স্থানে অটোভ্যান উল্টে ২০ ফুট নীচে পুকুরে পড়ে গেলে শুড়িমারা মন্ডলপাড়া গ্রামের বয়:বৃদ্ধ কৃষক আব্দুর রহমানের (৭৩) কোমড় ভেঙ্গে যায়। একামাত্র সম্বল ২টি গরু বিক্রি করে তিনি চিকিৎ করিয়েছেন। প্রাণে বেঁচে থাকলেও তিনি অচল হয়ে পড়ে আছেন।

গত ৩ মাস আগে আব্দুর রাজ্জাক নামের পল্লীবিদ্যুতের এক কর্মচারি মোটর সাইকেল নিয়ে নিজ বাড়িতে ঢোকার সময় পিছলে পুকুরে পড়ে যান। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। এমন দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। ঘোরপল্লী এলাকা হওয়ায় সেখানে সড়ক বাতির কোন ব্যবস্থা নাই। ফলে অন্ধকার রাতে রাস্তার ধ্বসে স্থানটি হয়ে ওঠ অতি বিপজ্জনক। খোট্টাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ্ আল ফারুক জানিয়েছেন, ধ্বসে যাওয়া স্থানটি মেরামতের জন্য পুকুরের পাশদিয়ে আংশিক গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে গাইড ওয়ালের বাকি অংশ নির্মাণ করা হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী ফারুক হাসান জানিয়েছেন, ‘পাবনা-বগুড়া’ প্রকল্পের আওতায় উক্ত রাস্তাটির উন্নয়ন ও সংস্কারের লক্ষে ধ্বসে যাওয়া অংশে প্যালাসাইডিং নির্মাণসহ অর্থ বরাদ্দ চেয়ে এলজিইডি’র সদর দপ্তরে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রস্তাব পত্রে রাস্তার চেইনেজ ভুল হওয়ায় তা বাতিল হয়ে গেছে। পুনরায় সংশোধনী পাঠানো হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শিঘ্রই অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে।


 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS