নাটোরের বড়াইগ্রামে কবরস্থান কমিটির চাহিদামত চাঁদা দিতে না পারায় কবর খনন করেও জেসমিন বেগম (৩০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ দাফন করতে দেওয়া হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে বাড়ির এক পাশে মরদেহটি দাফন করা হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃত জেসমিন বেগম উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের লোকমান হোসেন ফকিরের বড় মেয়ে এবং গোয়ালফা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সমজান আলীর স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক কলহের জেরে জেসমিন বাবার বাড়িতে অতিরিক্ত ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তার মরদেহ দাফনের জন্য সভাপতির অনুমতি নিয়ে স্বজনরা লক্ষ্মীপুর সামাজিক কবরস্থানে কবর খনন করেন। জুম্মার নামাজের পর জানাজার সময়ও নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু খনন শেষ হলে কবরস্থান কমিটির লোকজন সদস্য না হওয়ায় জেসমিনের বাবার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সেই টাকা দিতে না পারায় সামাজিক গোরস্থানে খনন করা কবরে দাফন করতে বাধা দেন কমিটি। এ নিয়ে সারাদিন আলোচনা করেও কাজ না হওয়ায় সন্ধ্যায় বাধ্য হয়ে বাড়ির এক পাশে পুনরায় কবর খনন করে ওই গৃহবধূর মরদেহ দাফন করা হয়।
মৃত গৃহবধূর চাচা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমার ভাই কবরস্থানের সদস্য না হলেও আমি সদস্য। তাই আমি নিজে চাহিদামত চাঁদা দেওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় চেয়ে সভাপতিসহ অন্যদের কাছে মরদেহ দাফনের অনুমতি দিতে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শোনেনি।
কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, কবরস্থানে মরদেহ দাফন করতে না দেওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত মৃতের বাবা আমাদের গোরস্থানের সদস্য না। তারপর মৃতের বাবা আগে যেই গোরস্থানের সদস্য ছিলেন তারাও বিষ খেয়ে মারা যাওয়ার কারণে সেখানে দাফন করতে দেয়নি। আমাদের গোরস্থানে কবর খননের আগে কাউকে জানায়নি তারা। পরবর্তী সময়ে আমাদের গোরস্থানের সকল সদস্য বাদী হলে আমি একটা সমাধান দেই যে, নির্ধারিত চাঁদা দিয়ে গোরস্থানের সদস্য হতে। মৃতের বাবা গোরস্থানের সদস্য না হয়ে পরে তাদের বাড়ির পাশে তার মেয়েকে দাফন করে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।