রাজশাহী প্রতিনিধি : রাতের বেলা সহযোগীদের নিয়ে যশোর থেকে রাজশাহীর বাগমারায় এসে খুনের শিকার হওয়ার ১৭দিন পর আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। খুনের শিকার হওয়া তরুণের চাচাত ভাইয়ের পর এবার বাবা বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
রাজশাহীর আদালতে দায়ের করা মামলায় স্থানীয় ঝিকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাগমারা থানার পুলিশ জানিয়েছে একই ঘটনায় একাধিক মামলার সুযোগ নেই, তবে আগের মামলার সাথে যুক্ত করে তদন্ত করা হবে। এই মামলার পর স্থানীয় একটি চক্র এজাহারে নাম থাকা লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে।
ঝিকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, যশোর থেকে কীভাবে নিহত তরুণ বাগমারায় আসলেন এবং কারা নিয়ে আসলেন সেটাসহ আসল খুনিদের খুঁজে বের করা উচিত। মামলার তদন্ত চলা অবস্থায় একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রে তার নাম যুক্ত করে আদালতে মামলা করা হয়েছে যা সুষ্ঠু তদন্তে বাধাগ্রস্ত করার শামিল। ওই চক্রটির লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা বলে তিনি অভিযোগ করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বাগমারা উপজেলার ঝিকড়া ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার সোহাগ হোসেন নামের এক যুবক খুনের শিকার হন। ওই রাতে স্থানীয় একটি পক্ষের হয়ে সহযোগীদের নিয়ে মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়ায় এলে দুইপক্ষের সংঘর্ষে পড়ে তিনি নিহত হন। এসময় স্থানীয় লোকজনের হাতে গাড়িচালকসহ তিন বহিরাগত আটক হয়।
পরে পুলিশ তাদের আটক করে। এই ঘটনার পরেরদিন নিহত তরুণের চাচাত ভাই সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ও র্যাব ওই মামলর সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করে।
এদিকে মামলার তদন্তকালীন নিহতের বাবা শরিফুল ইসলাম রাজশাহীর আমলি আদালতে একই অভিযোগে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য বাগমারা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। গত রোববার মামলাটি আদালত থেকে থানায় পৌঁছেছে। মামলায় ঝিকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার ভাই আসাদুল ইসলামের নামসহ আরও ২৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় রহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির সাথে নজরুল ইসলাম ও নওশাদ আলীর খাস পুকুর নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ওই পুকুরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারপিটের ঘটনা ঘটে। রাতে ১০-১২জনের একদল বহিরাগত ওই গ্রামে এলে গ্রামবাসীরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করে। নজরুলের পক্ষে অন্যান্য বহিরাগতদের সাথে রাতের বেলায় বাগমারায় এসে খুনের শিকার হন তরুণ সোহাগ হোসেন।
মামলা প্রসঙ্গে নিহত তরুণের বাবা বলেন, পুলিশ তার ভাতিজার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মামলা রেকর্ড করেছিলো। তাই তিনি আসামিদের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা করেছেন। থানার ওসি বলেন, নিহত তরুণের ভাই থানায় উপস্থিত হয়ে মামলা করেছেন। তিনিই এজাহার থানায় জমা দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।