নাগেশরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: নাগেশ্বরীতে সৌর শক্তিতে প্রাণ পেয়েছে চরাঞ্চলের কৃষি। সৌর সেচ পাম্পে চলছে সেচ কাজ। কম খরচে এ সেচ সুবিধা পেতে ক্রমেই বাড়ছে এর চাহিদা। বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট-লো ভোল্টেজ আর জ্বালানি তেলের খরচ বাড়ায় জমিতে সময়মত প্রয়োজনীয় সেচ দিতে না পারায় উৎপাদন ব্যাহত হয় কৃষকদের।
চিরায়ত এ দুর্ভোগের মাঝেও সৌর বিদ্যুতে স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চরাঞ্চলীয় দুটি গ্রাম বামনডাঙ্গা ও লুছনীর ৭০ জন কৃষক। সৌর সেচ পাম্পে ভুগর্ভস্থ পানি তুলে বোরো চাষে সেচ সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি খরচ কমেছে তাদের।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ণ সংস্থা জানায়, কৃষকদের সেচ সুবিধা দিতে সরকারিভাবে সিগমা কোম্পানীর মাধ্যমে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বামনডাঙ্গা ও লুছনী গ্রামে সৌর সেচ পাম্প স্থাপন করা হয়। সৌর শক্তিতে এর প্রতিটিতে ৬ ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে ঘণ্টায় ৮০ হাজার লিটার পানি তুলে তা সেচের কাজে ব্যবহার করা যায়। এর পরিচালনা ও দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয় গ্রামের আদর্শ কৃষক সমিতিকে। কার্যক্রমের শুরুতে এর আওতায় ছিল ১৭ একর জমি। তখন থেকে কৃষকেরা নির্ধারিত হারে সেচের মূল্য পরিশোধ করে চাষাবাদ করে আসছেন।
সেচের আওতাধীন কৃষকরা জানান, এটি তাদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির আশংকা, বিদ্যুতের লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের ভয় নেই। দিনের আলো যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ প্লান্ট সচল থাকে। নিরবিচ্ছন্ন সেচ সুবিধা পাওয়া যায়। কার্ডে ঘন্টাপ্রতি ১১০ টাকা রিচার্জ করে সেচ দেওয়া যায় দুই বিঘা জমিতে। রিচার্জ শেষ হলে কার্ড আবারও জমা দেয়া হয় বরেন্দ্র অফিসে।
এরপর রংপুর থেকে তা রিচার্জ করে আনিয়ে তাদের দেয়া হয়। এভাবেই দু:শ্চিন্তা ছাড়াই পাড় হয় বোরো মৌসুম। এতে মৌসুমে দুই বিঘা জমিতে সেচ বাবদ খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে ডিজেল পুড়িয়ে সমপরিমাণ জমিতে সেচ দিতে খরচ হয় প্রায় ৯ হাজার টাকা। ফলে সাশ্রয় হয় প্রায় ৪ হাজার টাকা।
লুছনি আদর্শ কৃষক সমিতির সভাপতি বাবু মিয়া জানান, আগে চরাঞ্চলীয় এসব জমিতে বছরে একবার আমন ধান ঘরে ওঠার পর বাকি সময় সেচের অভাবে অলস পড়ে থাকত। এখন সৌর সেচে বোরো চাষের পাশাপাশি শীতকালীন শাকসবজির চাষাবাদ হয়।
সম্পাদক মোজাফ্ফর হোসেন জানান, চরাঞ্চলের অনেকেই এ সেচ সুবিধা পেতে আগ্রহী হয়ে উঠছে। বিদ্যুৎ বিহীন এমন চরাঞ্চলে আরো সোলার প্লান্ট বসিয়ে সেচ সুবিধা দিতে পারলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটবে বলে আশাবাদী তারা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।