ভিডিও

রংপুরের চরাঞ্চলে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে

প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৪, ১১:০৭ রাত
আপডেট: মার্চ ১৩, ২০২৪, ১২:১২ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, রংপুর : রংপুর বিভাগের বিশেষ করে রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা জেলার চরাঞ্চলে বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। এ ফসল রফতানি হচ্ছে শ্রীলংকা, জাপান, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যেসহ বিভিন্ন দেশে। এতে করে এদিকে এইসব অঞ্চলের অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে আর কৃষকেরা সচ্ছলভাবে তাদের জীবনযাপন করছেন।

চরাঞ্চলের কৃষকেরা জানান, এই অঞ্চলের নদীগুলো যদি শাসন করা যায় তাহলে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব। যা বড় ভূমিকা রাখবে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে। বিশেষ করে রংপুর, লালমনিরহাটের চরে উৎপাদিত মিষ্টিকুমড়া রফতানি হচ্ছে মালয়েশিয়ায়। আর গাইবান্ধার চরাঞ্চলের মিষ্টি আলু যাচ্ছে জাপানে।


রংপুরের হারাগাছ পল্লীমারীর চরে গিয়ে দেখা গেছে, চরের জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। তারা জানান, বাপ দাদারা তাদের চরের জমিতে ফসল ফেলে জীবন ধারণ করেছে। তাদের থেকে পাওয়া জমিতে তারা এখন ফসল ফলাচ্ছেন। তাদের প্রতিটা বছর কাটে বন্যা, নদী ভাঙন আর বন্যার পানির সাথে যুদ্ধ করে। শত বাধা পেরিয়ে আঁকড়ে রেখেছেন কৃষিকেই।

তার জানান, রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা জেলার চরের জমিতে ফসল হয় ভালো। এখানকার শাক-সবজিতে কীটনাশক দিতে হয় না। সেজন্য দেশে চরের জমির ফসলের ব্যাপক চাহিদা। তাদের মতে দেশের খাদ্য নিরাপত্তার শক্ত বলয় তৈরি করেছেন উত্তরের চরাঞ্চলের কৃষকেরা চর মিলনের কৃষক নওশা কবিরাজ জানান, চরে এখন ভূট্টা, আলু, মিষ্টি কুমড়া, শশা, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, ধানসহ ২০ রকমের ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

মাটির উর্বরা শক্তি, ভালো বীজ নির্বাচন আর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে এখন চরে অনেক ভালো ফসল উৎপাদন হয়। পাইকারেরা অগ্রিম টাকা দিয়ে চরে উৎপাদিত ফসল তাদের কাজ থেকে কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন। এখন তার তাদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাজারের আড়তগুলোতে নিয়ে যেতে লাগছে না। এতে করে কৃষকদের বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে না।

কৃষি গবেষণারা জানান, দেশে ৩২ জেলার ১শ’ উপজেলার চরে ১ কোটি মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে ১০ লাখ মানুষের বসবাস। বর্তমানে এই অঞ্চলের প্রায় ৬শ’ চরের ১ লাখ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফসল। শুধু দেশীয় চাহিদাই নয়, চরের উৎপাদিত ফসল জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ব বাজারেও।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার ফসল হচ্ছে উত্তরের চরগুলোতে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিভাগের বিভিন্ন চর থেকে উৎপাদিত প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া, আলু ও মিষ্টি আলু রফতানি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান ও ভুটানে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, রংপুর ও লালমনিরহাট থেকে মিষ্টিকুমরা মালয়েশিয়ায় রফতানি হয়। গাইবান্ধার চরাঞ্চলের মিষ্টি আলু জাপানে যায়। এ কারণে চর এখন ধীরে ধীরে আমাদের রফতানি যোগ্য কৃষিপণ্যের হারে পরিণত হচ্ছে।

সরকার ও সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে মেকিং মার্কেটস ওয়ার্ক ফর দি চরস, এমফোরসি প্রকল্পের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের চার জেলাসহ মোট ছয়টি জেলায় বসবাসরত চরাঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে দশ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

উদ্দেশ্য প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারী মানুষের আয় বৃদ্ধি করা। রংপুরের তিস্তা নদী শাসন করা গেলে অনেক বেশি চরকে উৎপাদনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। যার মধ্যদিয়ে মজবুত হবে দেশের কৃষি ও অর্থনীতি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS