‘দৈনিক করতোয়া’ প্রতিবেদন প্রকাশের পর
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : ‘দৈনিক করতোয়ায়’ প্রতিবেদন প্রকাশের পর বগুড়ার ধুনট উপজেলায় অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে গরুর মৃত্যুর কারণ সনাক্ত করতে নমুনা সংগ্রহ করছেন ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দুই চিকিৎসক। তারা হলেন, ডা. কামরুন নাহার আক্তার ও ডা. মো. মহিবুল্লা।
ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জনবল ও প্রতিষেধক সংকটের কারণে বিনা চিকিৎসায় খামারি ও গৃহস্থর গরু মারা যাচ্ছে। গত ২০ দিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক গরু মারা গেছে।
ঘটনার পর থেকে খামারিদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। আক্রান্ত এসব গরুর মুখ দিয়ে লালা ঝরা, দুর্বলতা ও কিছু না খাওয়ার লক্ষণ ছিল। পরে ঘাড়বাঁকা হয়ে মারা যায় আক্রান্ত গরু। এ অবস্থায় রোগ নিশ্চিত হতে না পেরে ধারণার ওপর ভরসা করে দেওয়া হচ্ছে গরুর চিকিৎসা। কিন্ত কজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রতিদিনই গরু মরছে। একের পর এক গরুর মৃত্যুতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জনবল থাকার কথা ১১ জন। কিন্তু সেখানে কর্মরত আছেন মাত্র চারজন। এরমধ্যে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা একজন ও চারজন উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পদ শূন্য রয়েছে। একমাত্র ভেটেরিনারি সার্জন ১০ মার্চ থেকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ফলে অত্র কার্যালয়ে জনবল সংকটে চিকিৎসা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। এছাড়া রয়েছে প্রতিষেধক সংকট।
এ বিষয়ে ১২ মার্চ ‘করতোয়ায়’ ধুনটে বিনা চিকিৎসায় অজ্ঞাত রোগে মারা যাচ্ছে গরু, দিশেহারা কৃষক-শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রকাশিত সংবাদটি ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নজরে আসে। গত ১৫ মার্চ দুই চিকিৎসককে রোগাক্রান্ত গরুর নমুনা সংগ্রহের জন্য ধুনটে পাঠানো হয়েছে।
তারা ১৭ মার্চ পর্যন্ত ধুনট পৌর এলাকাসহ উপজেলার মথুরাপুর, ভান্ডারবাড়ি ও চিকাশি ইউনিয়নের কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রোগাক্রান্ত ১০টি গরুর নমুনা সংগ্রহ করছেন। এ বিষয়ে ঢাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডা. মো. মহিবুল্লা বলেন, গরুর রোগ নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।
মূলতঃ খামারি ও গৃহস্থদের সচেতনতার অভাবে গরু মারা যাচ্ছে। গরুর রোগ প্রতিরোধে তারা প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) ব্যবহার করছেন না। এছাড়া মৃত গরুগুলো মাটি চাপা দিয়ে না রেখে উন্মূক্ত জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে। ফলে মৃত গরু থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে আরো গরু আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কৃষকদের পরামর্শ ও সচেতন করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।