হাফিজা বিনাঃ ঈদের এখনও বেশ দেরি আছে। ঈদ সামনে রেখে বগুড়ার মার্কেট, শপিংমল ও ফ্যাশন হাউসগুলোতে কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। অনেকেই আগে-ভাগে কেনাকাটা করছেন। সব বয়সি মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করছে মার্কেটগুলোতে। এর মধ্যে যারা নিজেরা নিজের জামা ডিজাইন করেন তারা গজ কাপড়ের দোকান থেকে কাপড় নিয়ে ছুটছেন দর্জিবাড়ি। সাথে ঢু মারছেন লেস-ফিতার দোকানেও। সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত অনেককেই মার্কেটে মার্কেটে ঘুরতে দেখা গেছে। তাদের আগমনে খট্খট্ শব্দে দর্জির দোকানগুলোতে বেড়েছে চরম ব্যস্ততা।
উৎসব উপলক্ষ্যে সবার চোখেমুখে আনন্দ। পছন্দের জামাকাপড় কিনতে লম্বা সময় ব্যয় করছেন। সাথে সাথে ছোট্ট শিশুরাও বাবা-মার সাথে সাথে ঘুরছে মার্কেট ও শোরুমগুলোতে। বগুড়ার নিউমার্কেট, হকার্স মার্কেট ছাড়াও অভিজাত মার্কেট ও শোরুম গুলোতে দেখা যাচ্ছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উৎসবের আমেজ। ঈদ উৎসবে সবাইকে আনন্দ দেয়ার জন্য প্রতিটি পরিবারে এখন থেকেই প্রস্তুতি চলছে। চলছে মন-প্রাণ খুলে কেনাকাটা। তবে বেশিরভাগ কাটা কাপড় ও থ্রিপিসের দোকানে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে। পছন্দের পোশাকটি নিজের মত করে বানাতে তাই কাপড় নিয়ে দর্জি বাড়ি ছুটছেন উৎসবপ্রেমীরা।
এদিকে শহরের তো বটেই গ্রামে, পাড়া ও মহল্লার দর্জির দোকানগুলোতে সেলাই মেশিনের খট্ খট্ শব্দ জানান দিচ্ছে ঈদ আসতে আর দেরি নেই। শবে-বরাতের পর থেকেই নতুন পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। ঈদের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত চলবে তাদের এই ব্যস্ততা। রোজার প্রথম দিকে কাজের চাপ কম থাকলেও এখন দিন-রাত দর্জিপাড়ার কারিগরদের চোখে যেন ঘুম নেই। সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত। গ্রাহকদের মাপ অনুযায়ী সালোয়ার, কামিজ, শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।
কথা হয় বগুড়া শহরের সুত্রাপুর এলাকার গৃহবধূ তামান্না রহমানের সাথে। তার সাথে মেয়ে রিমিও আছে। সব কেনাকাটা শেষ বলতেই তিনি বলেন, আগে ভাগে মার্কেট করাই ভাল। ভিড়ের মধ্যে দোকনিরা ভাল করে পোশাক দেখাতে চায় না। আবার দর্জিরাও পড়ে কাপড় নিতে চায় না। এছাড়াও বাড়ির সবার কাপড় তাকেই কিনতে হয়। অনেক কেনাকাটা তাই আগেভাগেই কেনা-কাটা সারেন প্রতিবছর। ঈদ মানে উৎসব। আত্মীয় স্বজনরা বাড়ি আসবে। কাজেই ঈদ ঘনিয়ে আসার আগেই মার্কেটের কাজ শেষ করলে চাপ কমে।
মার্কেট ঘুরে দেখা যায় এবছর তরুণীরা কিনছেন সিনথেটিক কাতান, মটকা সিল্ক, আড়ং কটন, অরগাঞ্জা, ভিসকস কটন, লাখনৌ সুতি ও জর্জেট, জয়পুরি, সামু সিল্ক, মসলিন টিস্যু, চিকেন কাপড়, কোটা কটন। অন্যদিকে ছেলেদের পাঞ্জাবি গুলোর মধ্যে সুতি কাপড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি এর মধ্যে অববিন্দ, থাই জাপান, গিরিজ, কাতান, লাখনৌ সুতি ও জর্জেট কাপড়গুলো বেশি কিনছেন।
অন্যদিকে দোকানিরাও এসময়টা একটু ফ্রি আছেন। নতুন মাস পড়ার পর থেকেই পুরোদমে মার্কেট জমে উঠবে। চাকরিজীবীরা বেতন পাবেন, তার সাথে পাবেন উৎসব ভাতা। তখন দম ফেলার সময় থাকবে না। এজন্যই মার্কেট পুরোপুরি জমে ওঠার জন্য কাপড়, প্রসাধনী, জুতা-সেন্ডল, তৈরি পোশাক নিয়ে কর্মচারিদের নিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন উৎসবে ব্যবসা করার জন্য।
এদিকে এবছর দর্জিবাড়ি নিয়ে স্বস্তিতে আছেন উৎসবপ্রেমীরা। কোন দর্জিবাড়িতে এবছর নতুন করে আর মজুরি তেমন বাড়েনি। তবে উৎসবে বাহারি দামের বাহারি কাপড়ের ওপর নানা ধরনের ডিজাইন করতে একটু দাম বেশিই হাঁকছেন বলে অভিযোগ আছে ক্রেতাদের ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।