নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ পৌর শহরে রাতদিন দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩৫/৪০ হাজারের মতো অটোরিকশা। আগে সড়কে পায়ে প্যাডেল করা রিকশা চললেও আধুনিক সভ্যতার যুগে এখন আমদানি হয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ৩৮ দশমিক ৪২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের শহরে ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন চাকার নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৩হাজার ৮৮৭টি। এরপর পৌর কর্তৃপক্ষ ইজিবাইকের নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ রাখলেও শহরে এর পাঁচগুণের বেশি যানবাহন চলাচল করছে।
এছাড়াও বৈধ-অবৈধ ইজিবাইক, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ কয়েকহাজার গাড়ি চলাচল করায় যানজট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আজ সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের ব্যস্ততম সড়কের ব্রিজের মোড় থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হয়ে গোস্তহাটির মোড়, কাজীর মোড় থেকে কেডির মোড় ব্রিজের মোড় পর্যন্ত আটকে আছে কয়েকহাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যান।
ফলে কিছুক্ষণ পরপর তীব্র যানজট তৈরি হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। নওগাঁ শহরের প্রধান সড়কটি গেছে শহরের ভেতর দিয়ে। সড়কের দুইপাশে বড় বড় বিপণীবিতান, ব্যাংক-বীমাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে কিছুদূর পরপর ইজিবাইক ও অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এতে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় তৈরি হচ্ছে যানজট। সড়কে চলা এসব যানবাহনের ৮০ ভাগই ইজিবাইক। এছাড়া বেপরোয়া চলাচল ও চালকের অদক্ষতায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
নওগাঁ জেলা ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর(প্রশাসন) আফজাল হোসেন বলেন, যানজটের অন্যতম কারণ হলো যানবাহনের পরিমাণ বৃদ্ধি ও রাস্তার সংকীর্ণতা। এ ক্ষেত্রে পৌরসভা থেকে নিবন্ধন নেওয়া অটোরিকশা ও রিকশা চিহ্নিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এতে বাইরের অটোরিকশা শহরে ঢুকতে পারবে না। তখন যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করতে সুবিধা হবে। শহরের ব্যস্ততম সড়কের যানজট কমবে।
চালকদের দাবি, শহরের ভেতরে বৈধ স্ট্যান্ড এবং ফাঁকা জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তার ওপরেই ইজিবাইক দাঁড় করিয়ে রাখতে হচ্ছে। পৌরসভা থেকে যে পরিমাণ ইজিবাইকের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে, তার কয়েকগুন ইজিবাইক অবৈধভাবে চলছে এবং শহরের বাহিরে থেকে আসছে। এসব অবৈধ ইজিবাইকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিলে গাড়ির সংখ্যা কমে যাবে। তখন যানজটও কমে আসবে।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক বলেন, শহরের প্রধান সড়ক চার লেন করতে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। সড়কটি চার লেন হলে যানজট সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক সনি বলেন, আশপাশের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইজিবাইক অবাধে শহরে ঢুকে পড়ছে।
শহরের প্রবেশ মুখেই এসব অটোরিকশা থেকে যাত্রী নামিয়ে সেখান থেকে যাত্রী বহন করা গেলে শহরের যানজট ৫০ শতাংশ কমে যাবে। নওগাঁ শহরের ভেতর যাওয়া প্রধান সড়কটি খুব সরু। সড়কটি প্রশস্ত না হওয়া পর্যন্ত যানজটের সমস্যার সমাধান হবে না। এছাড়া জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা পৌরসভার একার পক্ষে সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।