বদিউদ-জ্জামান মুকুল, সোনাতলা (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সোনাতলায় ৯টি চরে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে কাউনের চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কাউন চাষে উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। তাই ওই উপজেলার চরাঞ্চলবাসীরা দিনদিন কাউন চাষে ঝুঁকে পড়েছে। ভাতের পাশাপাশি কাউনের চাউলের পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে চরাঞ্চলবাসী এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে কাউন চাষে মনোযোগী হয়েছেন। এ নিয়ে চরাঞ্চলবাসীরা চোখে রঙিন স্বপ্ন দেখছেন।
সংশ্লিষ্ট উপজেলার পাকুল্লা ও তেকানী চুকাইনগর ইউনিয়নের খাবুলিয়া, মহব্বতের পাড়া, জন্তিয়ার পাড়া, আউচার পাড়া, সরলিয়া, ভিকনের পাড়া, খাটিয়ামারী, মির্জাপুর, পাকুল্লা এলাকার চরাঞ্চলে এবার প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে কৃষক কাউন চাষ করেছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ওই উপজেলায় ১১০ বিঘা জমিতে কাউন চাষ করা হয়েছিল।
গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে এবার বেশি কাউন চাষ করা হয়েছে। ২ মৌসুমে কাউন চাষ করা যায়। শীত ও গ্রীষ্মকালে কাউন চাষ করা হয়ে থাকে। তবে চরাঞ্চলের কৃষকেরা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য গ্রীস্মকালে চরাঞ্চলে কাউন চাষ করে থাকে। কাউনের চাল খেতে খুব সুস্বাদু। কাউন ভাত এবং পিঠা-পায়েস তৈরিতে ব্যবহার করা যায়। চরাঞ্চলের বাসিন্দারা চালের পরিবর্তে খুব স্বল্প মূল্যে কাউনের চাল দিয়ে ভাত তৈরি করে খায়। কাউন বপনের ৮০-৯০ দিনের মাথায় ঘরে তোলা সম্ভব। প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ কাউন উৎপন্ন হয়। প্রতি মণ কাউন ১৫০০-১৮০০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়।
উপজেলার খাবুলিয়া এলাকার তুহিন মিয়া বলেন, এবার তিনি ৭ বিঘা জমিতে কাউন চাষ করেছেন। গত বছর ৫ বিঘা জমিতে কাউন চাষ করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক টাকা আয় করেছেন। জন্তিয়ার পাড়া এলাকার শামসুল হক বলেন, এবার তিনি ১২ বিঘা জমিতে কাউনের চাষ করেছেন। এটি একটি লাভজনক ফসল। উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। গত বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে কাউন চাষ করে ৭০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এই ফসলের উৎপাদন খরচ নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহরাব হোসেন বলেন, কাউন মূলতঃ চরাঞ্চলে বেশি চাষ হয়ে থাকে। এটি চরাঞ্চলবাসীদের প্রধান খাদ্য। প্রকৃতির সাথে লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় চরাঞ্চলবাসীদের। তাই তাদের আর্থিক সামর্থ্যরে মধ্যে খাদ্য তালিকায় কাউন রয়েছে।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, চেলোপাড়া, বগুড়ার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর চরাঞ্চলের ৩শতাধিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে কাউনের বীজ বিতরণ করা হয়। এতে করে কৃষক কাউন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এটি একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। দিন দিন চরাঞ্চলের কৃষকেরা এই ফসলের প্রতি ঝুঁকে পড়ছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।