সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটায় নিখোঁজের তিন দিন পর বসতবাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সম্রাট (১৭) নামে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাটিগ্রামের পুলিশ সদস্য মতিয়ার রহমানের বসতবাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে ওই যুবকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত সম্রাট উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার শ্যামপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে।
এঘটনায় নিহত সম্রাটের বন্ধু ও বোনারপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাটি গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে রিফাতকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকাবাসী এবং পুলিশ জানায়, উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে সম্রাট তার বন্ধু একই উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের মিলন মিয়ার ছেলে রিফাতের সাথে গত ১৭ এপ্রিল রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
কিন্তু সম্রাট বাড়িতে আর ফিরে না আসায় পরদিন তার মা-বাবা থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন। সাধারণ ডায়েরির সূত্র ধরে বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে পরদিন ১৯ এপ্রিল নিখোঁজ সম্রাটের বন্ধু রিফাতকে সাঘাটা থানা পুলিশ আটক করে।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে রিফতা তার বন্ধু সম্রাটকে হত্যা এবং লাশ গুম করার কথা স্বীকর করে। তার স্বীকারোক্তি ও বর্ণনা অনুযায়ী ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীদের সহযোগিতায় পশ্চিশ বাটি গ্রামের বাসিন্দা মতিয়ার রহমানের বসতবাড়ির ল্যাট্রিনের সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে পুলিশ কিশোর সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, রিফাত হোসেনের এবং সম্রাট একই বিদ্যালয়ে এবং একই ক্লাসে পড়াশোনার কারণে তাদের মধ্যে বন্ধুতের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গভীর বন্ধুত্বের সুবাদে অনলাইন জুয়ার প্রতি দু’জনই আসক্ত ছিল। এক পর্যায়ে সম্রাট অনলাইনে জুয়া খেলে টাকা হারালে তার একটি ক্যামেরা বন্ধু রিফাতের কাছে বন্ধক রাখে। এর কিছুদিন পর জুয়া খেলে রিফাত আবার টাকা হারায়। তখন সম্রাটের বন্ধক রাখা ওই ক্যামেরাটি রিফাত অন্যত্র বিক্রি করে।
এদিকে এর কিছুদিন পরই সম্রাট টাকা সংগ্রহ করে ক্যামেরাটি ফেরত নিতে রিফাতের কাছে যায়। কিন্তু রিফাত ক্যামেরাটি অন্যজনের কাছে বিক্রি করার কথা বলে। সাম্রাট শখের ক্যামেরাটি ফেরত না পেয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতন্ডার সৃষ্টি হয়।
পরে রিফাত সুকৌশলে সম্রাটকে নিজের বাড়িতে ডেকে এনে খাবারের সাথে ঘুমের ওষধ খাওয়ায়। এতে সম্রাট অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তাকে গোপনে কুপিয়ে হত্যার পর মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে তার প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য মতিয়ার রহমানের বসতবাড়ির ল্যাট্রিনের সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর ফেলে দেয়।
সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, সম্রাট নিখোঁজ এবং হত্যাকান্ডের পর লাশ গুমের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। এর সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে পুলিশের তদন্ত চলছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।