চিকিৎসক স্বল্পতায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ
বাগাতিপাড়া (নাটোর) সংবাদদাতা : সারাদেশের ন্যায় নাটোরের বাগাতিপাড়াতেও তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। হাসপাতালে বাড়ছে জ্বর, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, হিটস্ট্রোকসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সব বয়সের মানুষের কষ্ট হলেও এই গরমে সবচেয়ে বেশি কাবু করেছে বয়স্ক ও শিশুদের।
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গেল ঈদুল ফিতরের পর থেকে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তাদের সিংহভাগই শিশু ও বয়স্ক রোগী। আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ৩১ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ৬২জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
যাদের বেশির ভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। অন্যরা জ্বর, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত। জরুরি বিভাগে আরও চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালের দিকে সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন ডায়রিয়া রোগী বেশি। জরুরি বিভাগের সামনে প্রচণ্ড ভিড়।
ওয়ার্ডের শয্যা, মেঝে, বারান্দা সবখানেই রোগী ও রোগীর স্বজনদের ভিড়। তীব্র গরমের কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যে কারণে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে। ভর্তি রোগীর পাশাপাশি প্রতিদিন কয়েকশ’ মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশি, মামস, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলার বাজিতপুর এলাকার রিমা খাতুন (২০) নামে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডের ৪ নাম্বার বেডে ভর্তি এক রোগী জানান, জ্বর ও বমি নিয়ে গত দুই দিন আগে ভর্তি হয়েছি।
এখন জ্বর কমেছে তবে বমি হচ্ছেই এবং শরীর খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে কিছু খেতে পারছি না। ডাক্তাররা চিকিৎসা দিচ্ছেন। হাসাপাতালে দায়িত্বরত শাহানাজ পারভীন নামের এক নার্স বলেন, একবারে ৮/১০ জন করে রোগী আসতেছে। তখন আমরা কাকে রেখে কাকে আগে সেবা দিবো ভেবে পাচ্ছি না। আমাদের খুব কস্ট হচ্ছে। রোজার মধ্য থেকে রোগীর চাপ ব্যাপক বেড়ে গেছে। বেশির ভাগ রোগীই গরমজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একদিকে রোগীর চাপ অন্যদিকে ডাক্তার স্বল্পতা। মাত্র চারজন মেডিকেল অফিসার এবং আমি নিজেই এত রোগীর সেবা দেয়ার জন্য রীতিমত যুদ্ধ করছি। মানুষদেরকে এই গরমে সচেতন হতে হবে।
বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। এসময়ে শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। শিশুদের নিয়মিত গোসল করাতে হবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এছাড়া সকলকেই প্রচুর পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন ও তরল খাবার খেতে হবে। তেল-মশলাজাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।